গল্পগুচ্ছ Өо > বৃহৎ বাজারের মতো স্থানে আসিয়া উপস্থিত হইল। অতঃপর কোনদিকে যাইতে হইবে ভাবিতেছে এমন সময় পরিচিত ঝমকম শব্দ শুনিতে পাইল। চিঠির থলে কাধে করিয়া উর্ধ্বশ্বাসে ডাকের রানার আসিয়া উপস্থিত হইল। মৃন্ময়ী তাড়াতাড়ি তাহার কাছে গিয়া কাতর প্রান্তস্বরে কহিল, “কুশীগঞ্জে আমি বাবার কাছে যাব, আমাকে তুমি সঙ্গে নিয়ে চলে না।” সে কহিল, “কুশীগঞ্জ কোথায় আমি জানিনে।” এই বলিয়া ঘাটে বাধা ডাকনৌকার মাঝিকে জাগাইয়া দিয়া নৌকা ছাড়িয়া দিল । তাহার দয়া করিবার বা প্রশ্ন করিবার সময় নাই । দেখিতে দেখিতে হাট এবং বাজার সজাগ হইয়া উঠিল। মৃন্ময়ী ঘাটে নামিয়া একজন মাঝিকে ভাকিয়া কহিল, “মাঝি, আমাকে কুশীগঞ্জে নিয়ে যাবে ” মাঝি তাহার উত্তর দিবার পূর্বেই পাশের নৌকা হইতে একজন বলিয়া উঠিল, “আরে কে ও ? মিছু মা, তুমি এখানে কোথা থেকে ।” মৃন্ময়ী উচ্ছ্বসিত ব্যগ্রতার সহিত বলিয়া উঠিল, "বনমালী, আমি কুশীগঞ্জে বাবার কাছে যাব, আমাকে তোর নৌকায় নিয়ে চল।” বনমালী তাহাদের গ্রামের মাঝি ; সে এই উচ্চুম্বলপ্রকৃতি রালিকাটিকে বিলক্ষণ চিনিত, সে কহিল, “বাবার কাছে যাবে ? সে তো বেশ কথা । চলো, আমি তোমাকে নিয়ে बाहि ।” यूद्मग्री cनौकांग्र उठेिण । মাঝি নৌকা ছাড়িয়া দিল । মেঘ করিয়া মুষলধারে বৃষ্টি আরম্ভ হইল। ভাদ্রমাসের পূর্ণ নদী ফুলিয়া ফুলিয়া নৌকা দোলাইতে লাগিল, মৃন্ময়ীর সমস্ত শরীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন হইয়া আসিল ; অঞ্চল পাতিয়া সে নৌকার মধ্যে শয়ন করিল এবং এই দুরন্ত বালিকা নদী-দোলায় প্রকৃতির স্নেহপালিত শাস্ত শিশুটির মতে অকাতরে ঘুমাইতে লাগিল। জাগিয়া উঠিয়া দেখিল, সে তাহার শ্বশুরবাড়িতে থাটে গুইয়া আছে। তাহাকে জাগ্রত দেখিয়া কি বকিতে আরম্ভ করিল। ঝির কণ্ঠস্বরে শাশুড়ী আসিয়া অত্যন্ত কঠিন কঠিন করিয়া বলিতে লাগিলেন। মৃন্ময়ী বিস্ফারিতনেত্রে নীরবে তাহার মুখের দিকে চাহিয়া রহিল অবশেষে তিনি যখন তাহার বাপের শিক্ষাদোষের উপর কটাক্ষ করিয়া বলিলেন, তখন মৃন্ময়ী ক্রতপদে পাশের ঘরে প্রবেশ করিয়া ভিতর হইতে শিকল বন্ধ করিয়া দিল । * অপূর্ব লজার মাথা খাইয়া মাকে আসিয়া বলিল, “মা, বউকে দুই-একদিনের জন্তে একবার বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিতে দোষ কী।” মা অপূর্বকে ‘ন জুতো ন ভবিস্তুতি’ ভংগনা করিতে লাগিলেন, এবং দেশে এত মেয়ে থাকিতে বাছিয়া বাছিয়া এই অস্ট্রিাহকারী দম্বা-মেয়েকে ঘরে আনার জন্ত তাহাকে যথেষ্ট গঞ্জন করিলেন।
