পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y ( br রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী হিন্দী সাহিত্যে স্রোত বইয়ে দিয়েছে— পরিবর্তনের পথে নতুন গতিদান করেছে- হিন্দী ভাষার গৌরব বাড়িয়েছে। অনুভবে এর সত্যতা আমাদের কাছে সহজেই ধরা পড়ে। আজ পর্যন্ত সেই স্রোত বিশিষ্ট পথ রচনা করে আধুনিক হিন্দী সাহিত্যে বয়ে চলে এসেছে। রামায়ণ গান করত। তারা সেই গান থেকে যেন অমৃতলাভ করে সমস্ত দিনের ক্লাস্তি দূর করত— তাদের অবসর সময়কে রসময় করে তুলত। তাদের ভিতর দিয়ে আমি সর্বপ্রথম তুলসীদাসের প্রতিভার পরিচয় পেয়েছি। বর্তমানে বাংলা এবং হিন্দী সাহিত্যে নতুন কাল এসেছে। সমস্ত পরিবর্তিত হতে চলেছে— আমাদের চিত্তের গতি বদলে গিয়েছে কালের প্রভাবে— মানুষের কাব্যরুচিকেও সে-গতি দিয়েছে বদলে। য়ুরোপের সাহিত্য আমাদের দেশের সাহিত্যকে এক নতুন পন্থায় নিয়ে গেছে— নতুন বিকাশের পথ খুজে দিয়েছে। তবু এ কথাও ভুললে চলবে না— যাদের শিক্ষিত বলি তাদের প্রভাব অতি সামান্য, জনসাধারণের চিত্ত হচ্ছে দেশের যথার্থ ভূমি; যেখানে স্বভাবত প্রকৃতির প্রেরণায় ফসল ফলে সে হচ্ছে সর্বজনের চিত্তক্ষেত্র। সে-ক্ষেত্রে যথার্থ সৃষ্টির অধিকারের পথে যুরোপীয় সাহিত্যের প্রভাব ব্যাঘাত জন্মাতে পারবে না। দেশের সেই সৰ্ব্বজনের চিত্তক্ষেত্র থেকে তুলসীদাসের অধিকার কোনো কালেই যাবে না। র্তার দান স্থায়ী মহান প্রতিভার বিকাশ নিয়ে কালের প্রভাবকে অতিক্রম করে চিরকাল দেশকে সমৃদ্ধ করবে। রচনাকাল শ্রাবণ ১৩৪৭ বালুচর ২০ আশ্বিন ১৩৬০