পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७१२ রবীন্দ্র-রচনাবলী প্রথম দৰ্ভক। হারে হা, আমাদের গোসাই। এমন সাজ তার আর কখনো দেখি নি ! একেবারে চোখ বলসে যায়। তৃতীয় দর্তক। ঘরে কী আছে রে ভাই সব বের করু। দ্বিতীয় দৰ্তক। বনের জাম আছে রে । চতুর্থ দৰ্ভক। আমার ঘরে খেজুর আছে। প্রথম দৰ্তক। কালো গোরুর দুধ শিগগির দুয়ে আনে। দাদা । দাদাঠাকুরের প্রবেশ আচার্য । ( প্রণাম করিয়া ) জয় গুরুজির জয় ! পঞ্চক। এ কী ! এ যে দাদাঠাকুর । গুরু কোথায় ? g দর্ভকদল । গোসাইঠাকুর । প্রণাম হই । খবর দিয়ে এলে না কেন ? তোমার ভোগ যে তৈরি হয় নি । দাদাঠাকুর । কেন ভাই, তোদের ঘরে আজ রান্না চড়ে নি নাকি ? তোরাও মন্ত্র নিয়ে উপোস করতে আরম্ভ করেছিস নাকি রে ? প্রথম দৰ্ভক। আমরা আজ শুধু মাষকলাই আর ভাত চড়িয়েছি। ঘরে আর কিছু ছিল না। দাদাঠাকুর । আমারও তাতেই হয়ে যাবে। পঞ্চক। দাদাঠাকুর, আমার ভারি গর্ব ছিল এ রাজ্যে একলা আমিই কেবল চিনি তোমাকে । কারো যে চিনতে আর বাকি নেই। প্রথম দৰ্তক। ঐ তো আমাদের গোসাই, পূর্ণিমার দিনে এসে আমাদের পিঠে খেয়ে গেছে, তার পর এই কতদিন পরে দেখা। চল ভাই, আমাদের যা আছে সব সংগ্রহ করে আনি । [ প্রস্থান দাদাঠাকুর । আচার্য, তুমি এ কী করেছ ? আচার্য। কী যে করেছি তা বোঝবারও শক্তি আমার নেই। তবে এইটুকু বুঝি— আমি সব নষ্ট করেছি। দাদাঠাকুর । যিনি তোমাকে মুক্তি দেবেন তাকেই তুমি কেবল বঁাধবার চেষ্টা করেছ। আচার্য। কিন্তু বাধতে তো পারি নি ঠাকুর । তাকে বঁধেছি মনে করে যতগুলে৷ পাক দিয়েছি সব পাক কেবল নিজের চারি দিকেই জড়িয়েছি। যে হাত দিয়ে সেই বাধন খোলা যেতে পারত সেই হাতটা স্বদ্ধ বেঁধে ফেলেছি ।