পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কথা। গোবিন্দ ভাবিতেছিল ; হেনকালে এসে পাঠান কহিল তারে, “যাব চলি দেশে, ঘোড়া-যে কিনেছ তুমি দাও তার দাম । কহিল গোবিন্দ গুরু, শেখজি, সেলাম, মূল্য কালি পাবে, আজি ফিরে যাও ভাই ।” পাঠান কহিল রোষে, “মূল্য আজই চাই ।” এত বলি জোর করি। ধরি তার হাত--- চোর বলি দিল গালি | শুনি অকস্মাৎ গোবিন্দ বিজুলি-বেগে খুলি নিল আসি, পলকে সে পাঠানের মুণ্ড গেল খসি ; মাথা নাড়ি কহে গুরু, ‘বুঝিলাম আজ আমার সময় গেছে । পাপ তরবার লঙঘন করিল আজি লক্ষ্য আপনার নিরর্থক রক্তপাতে ; এ বাহুর পরে বিশ্বাস ঘুচিয়া গেল চিরকালতরে । ধুয়ে মুছে যেতে হবে এ পাপ, এ লাজআজ হতে জীবনের এই শেষ কাজ ।” গোবিন্দ লইল তারে ডাকি । রাত্ৰিদিন পালিতে লাগিল তারে সন্তানের মতো চোখে চোখে | শাস্ত্ৰ আর শাস্ত্ৰবিদ্যা যত আপনি শিখালো তারে । ছেলেটির সাথে বৃদ্ধ সেই বীর গুরু সন্ধ্যায় প্ৰভাতে খেলিত ছেলের মতো । ভক্তগণ দেখি গুরুরে কহিল আসি, “একি প্ৰভু, একি ! আমাদের শঙ্কা লাগে । ব্যাখ্রশাবকেরে যত যত্ন কর, তার স্বভাৰ কি ফেরে ? যখন সে বড়ো হবে তখন নখর, গুরুদেব, মনে রেখো হবে যে প্রখর ।” গুরু কহে, “তাই চাই, বাঘের বাচ্ছারে বাঘ না করিনু যদি কী শিখানু, তারে ? বালক যুবক হল গোবিন্দের হাতে দেখিতে দেখিতে । ছায়া-হেন ফিরে সাথে, পুত্ৰ-হেন করে তার সেবা । ভালোবাসে প্ৰাণের মতন- সদা জেগে থাকে পাশে ডান হস্ত যেন । যুদ্ধে হয়ে গেছে। গত শিখগুরু গোবিন্দের পুত্র ছিল যত VN)