পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী ماده কিন্তু লঙ্কামরিচের স্বাদটা যে কী, তাহা বিনোদিনীই বুঝিতেছিল—কেবল সঙ্গে তাহার তরকারি ছিল না। তাহার শিরায় শিরায় যেন আগুন ধরিয়া গেল। সে যেদিকে চায়, তাহার চোখে যেন ফুলিঙ্গবর্ষণ হইতে থাকে। এমন সুখের ঘরকল্প —এমন সোহাগের স্বামী । এ-ঘরকে যে আমি রাজার রাজত্ব, এ-স্বামীকে যে আমি পায়ের দাস করিয়া রাথিতে পারিতাম। তখন কি এ-ঘরের এই দশা, এ-মানুষের এই ছিরি থাকিত। আমার জায়গায় কি না এই কচি খুকি, এই খেলার পুতুল । ( আশার গলা জড়াইয়া ) ভাই চোখের বালি, বলো না ভাই, কাল তোমাদের কী কথা হইল ভাই । আমি তোমাকে যাহা শিখাইয়া দিয়াছিলাম তাহা বলিয়াছিলে ? তোমাদের ভালোবাসার কথা শুনিলে আমার ক্ষুধাতৃষ্ণা থাকে না ভাই ।” ১২ মহেন্দ্র এক দিন বিরক্ত হইয়া তাহার মাকে ডাকিয়া কহিল, "এ কি ভালো হইতেছে ? পরের ঘরের যুবতী বিধবাকে আনিয়া একটা দায় ঘাড়ে করিবার দরকার কী । আমার তো ইহাতে মত নাই—কী জানি কখন কী সংকট ঘটিতে পারে।” রাজলক্ষ্মী কহিলেন, “ও যে আমাদের বিপিনের বউ, উহাকে আমি তো পর মনে করি না ।” মহেন্দ্ৰ কহিল, “না মা, ভালো হইতেছে না। আমার মতে উহাকে রাখা উচিত ट्ध्न नीं ।* রাজলক্ষ্মী বেশ জানিতেন, মহেন্দ্রের মত অগ্রাহ করা সহজ নহে । তিনি বিহারীকে ডাকিয়া কছিলেন, “ও বেহারি, তুই একবার মহিনকে বুঝাইয়া বল। বিপিনের বউ আছে বলিয়াই এই বৃদ্ধবয়সে আমি একটু বিশ্রাম করিতে পাই। পর হউক, যা হউক, আপন লোকের কাছ হইতে এমন সেবা তো কখনো পাই নাই ।” বিহারী রাজলক্ষ্মীকে কোনো উত্তর না করিয়া মহেন্দ্রের কাছে গেল— কহিল, “মহিনদা, বিনোদিনীর কথা কিছু ভাবিতেছ ?” মহেন্দ্ৰ হাসিয়া কহিল, “ভাবিয়া রাত্রে ঘুম হয় না । তোমার বোঠানকে জিজ্ঞাসা করো না, আজকাল বিনোদিনীর ধ্যানে আমার আর-সকল ধ্যানই ভঙ্গ হইয়াছে।” আশা ঘোমটার ভিতর হইতে মহেন্দ্রকে নীরবে তর্জন করিল। बिहान्नै कहिल, "वल कैौ । दिउँौम्न विश्शुक्र ।” মহেন্দ্র। ঠিক তাই। এখন উহাকে বিদায় করিবার জন্ত চুনি ছটফট করিতেছে।