পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আত্মশক্তি &brరీ পরিষং জামাদিগকে যেখানে আহবান করিয়াছেন তাহা কলেজ-ক্লাস হইতে দূরে, তাহা ক্রিকেট-ময়দানেরও সীমান্তরে, সেখানে আমাদের দরিদ্র জননীর সন্ধ্যাবেলাকার । মাটির প্রদীপটি জলিতেছে । সেখানে আয়োজন খুব বেশি নাই – কিন্তু, তোমরা এক সময়ে তাহার কাছে শ্রান্তদেহে ফিরিয়া আসিবে বলিয়া সমস্ত দিন যিনি পথ তাকাইয়া বসিয়া আছেন, আয়োজনে কি তাহার গৌরব প্রমাণ হইবে । তিনি এইমাত্র জানেন যে, তোমরাই তাহার একমাত্র গৌরব এবং আমরা জানি, তোমাদের একমাত্র গৌরব তাহার চরণের ধূলি, ভিক্ষালব্ধ রাজপ্ৰসাদ নহে। পরীক্ষাশালা হইতে আজ তোমরা সদ্য আসিতেছ, সেইজন্য ঘরের কথা আজই তোমাদিগকে স্মরণ করাইবার যথার্থ অবকাশ উপস্থিত হইয়াছে—সেইজন্যই বঙ্গবাণীর হইয়া বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষং আজ তোমাদিগকে আহবান করিয়াছেন । কলেজের বাহিরে যে-দেশ পড়িয়া আছে তাহার মহত্ব একেবারে ভুলিলে চলিবে না । কলেজের শিক্ষার সঙ্গে দেশের একটা স্বাভাবিক যোগ স্থাপন করিতে হইবে । অন্য দেশে সে-যোগ চেষ্টা করিয়া স্থাপন করিতে হয় না । সে-সকল দেশের কলেজ দেশেরই একটা অঙ্গ— সমস্ত দেশের আভ্যন্তরিক প্রকৃতি তাহাকে গঠিত করিয়া তোলাতে দেশের সহিত কোথাও তাহার কোনো বিচ্ছেদের রেখা নাই । আমাদের কলেজের সহিত দেশের ভেদচিহ্নহীন স্বন্দর ঐক্য স্থাপিত হয় নাই । যেরূপ দেখা যাইতেছে, বিস্তাশিক্ষা কালক্রমে কতৃপক্ষের সম্পূর্ণ আয়ত্তাধীন হইয়া এই প্রভেদকে বাড়াইয়া তুলিবে । এমন অবস্থায় আমাদের বিশেষ চিন্তার বিষয় এই হইয়াছে, কী করিলে বিদেশীচালিত কলেজের শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রদিগকে একটা স্বাধীন শিক্ষায় নিযুক্ত করিয়া শিক্ষাকার্যকে যথার্থভাবে সম্পূর্ণ করা যাইতে পারে । তাহা না করিলে শিক্ষাকে কোনোমতে পুথির গণ্ডির বাহিরে আনা দুঃসাধ্য হইবে । নানা আলোচনা নানা বাদ প্রতিবাদের ভিতর দিয়া পাঠ্যবিষয়গুলি যেখানে প্রত্যহ প্রস্তুত হইয়া উঠিতেছে, যাহারা আবিষ্কার করিতেছেন, স্বষ্টি করিতেছেন, প্রকাশ করিতেছেন, র্তাহারাই যেখানে শিক্ষা দিতেছেন, সেখানে শিক্ষা জড় শিক্ষা নহে। সেখানে কেবল যে বিষয়গুলিকেই পাওয়া যায়, তাহা নহে, সেই সঙ্গে দৃষ্টির শক্তি, মননের উদ্যম, স্বষ্টির উৎসাহ পাওয়া যায়। এমন অবস্থায় পুথিগত বিদ্যার অসহ জুলুম থাকে না, গ্রন্থ হইতে যেটুকু লাভ করা যায়, তাহারই মধ্যে একান্তভাবে दक इझे८ङ झग्न नां । আমাদের দেশেও পুথিকে মনের রাজা না করিয়া মনকে পুথির উপর আধিপত্য