পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२8 রবীন্দ্র-রচনাবলী রোহিণী। যদি জিজ্ঞাসা করেন কে দিলে ? সুদৰ্শন । তার কোনো উত্তর দিতে হবে না—তিনি ঠিক বুঝতে পারবেন । তার মনে ছিল আমি চিনতেই পারব না—ধরা পড়েছেন সেটা না জানিয়ে ছাড়ছি নে। (ফুল লইয়া রোহিণীর প্রস্থান ) আমার মন আজ এমনি চঞ্চল হয়েছে—এমন তো কোনোদিন হয় না। এই পূর্ণিমার আলো মদের ফেনার মতে চারিদিকে উপচিয়ে পড়ছে, আমাকে যেন মাতাল করে তুলেছে। ওগো বসন্ত, যে-সব ভীরু লাজুক ফুল পাতার আড়ালে গভীর রাত্রে ফোটে, যেমন করে তাদের গন্ধ উড়িয়ে নিয়ে চলেছ তেমনি তুমি আমার মনকে হঠাৎ কোথায় উদাস করে দিলে, তাকে মাটিতে পা ফেলতে দিলে না !—ওরে প্রতিহারী। প্রতিহারী ( প্রবেশ করিয়া ) । কী মহারানী । সুদৰ্শন। ওই যে আম্রবনের বীথিকার ভিতর দিয়ে উংসব-বালকের আজ গান গেয়ে যাচ্ছে—ডাক ডাক ওদের ডেকে নিয়ে আয়—একটু গান শুনি । ( প্রতিহারীর প্রস্থান ) ভগবান চন্দ্রমা, আজ আমার এই চঞ্চলতার উপরে তুমি যেন কেবলই কটাক্ষপাত করছ ! তোমার স্মিত কৌতুকে সমস্ত আকাশ যেন ভরে গেছে—কোথাও আমার আর লুকোবার জায়গা নেই—আমি কেমন আপনার দিকে চেয়ে আপনি লজ্জ পাচ্ছি! ভয় লজ্জা সুখ দুঃখ সব মিলে আমার বুকের মধ্যে আজ নৃত্য করছে । শরীরের রক্ত নাচছে, চারিদিকের জগং নাচছে, সমস্ত ঝাপসা ঠেকছে। বালকগণের প্রবেশ এস, এস, তোমরা সব মূর্তিমান কিশোর বসন্ত, ধরে তোমাদের গান ধরে। আমার সমস্ত শরীর মন গান গাইছে অথচ আমার কণ্ঠে সুর আসছে না । তোমরা আমার হয়ে গান গেয়ে যাও । বালকগণের গান বিরহ মধুর হল আজি মধুরাতে। গভীর রাগিণী উঠে বাজি বেদনাতে ] ভরি দিয়া পূর্ণিমা নিশা অধীর আদৰ্শন-তৃষা