পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় ჯ983ა বুদ্ধির জোরে সে বাহিরেই জীবনের সার্থকতা লাভ করিবে । তাহার সঙ্গিনী সুরঙ্গম তাহাকে নিষেধ করিয়াছিল। বলিয়াছিল, অস্তরের নিভৃত কক্ষে যেখানে প্রভু স্বয়ং আসিন্থা আহবান করেন সেখানে তাহাকে চিনিয়া লইলে তবেই বাহিরে সর্বত্র তীহাকে চিনিয়া লইতে ভূল হইবে না ;–নহিলে যাহারা মায়ার দ্বারা চোখ ভোলায় তাহাদিগকে রাজা বলিয়া ভূল হইবে। সুদর্শন এ-কথা মানিল না । সে সুবর্ণের রূপ দেখিয়া তাহার কাছে মনে মনে আত্মসমপণ করিল। তখন কেমন করিয়া তাহার চারিদিকে আগুন লাগিল, অস্তরের রাজাকে ছাড়িতেই কেমন করিয়া তাহাকে লইয়া বাহিরের নানা মিথ্যা-রাজার দলে লড়াই বাধিয়া গেল,—সেই অগ্নিদাহের ভিতর দিয়া কেমন করিয়া আপন রাজার সহিত তাহার পরিচয় ঘটিল, কেমন করিয়া দুঃখের আঘাতে তাহার অভিমান ক্ষয় হইল এবং । অবশেষে কেমন করিয়া হার মানিয়া প্রাসাদ ছাড়িয়া পথে দাড়াইয়া তবে সে তাহার সেই প্রভূর সঙ্গলাভ করিল, যে-প্ৰভু কোনো বিশেষ রূপে বিশেষ স্থানে বিশেষ প্রব্যে নাই, যে-প্ৰভু সকল দেশে সকল কালে ; আপন অস্তরের আনন্দরসে র্যাহাকে উপলব্ধি করা যায়,—এ নাটকে তাহাই বর্ণিত হইয়াছে। শেষের কবিতা শেবের কবিতা ১৩৩৬ সালের ভাদ্র মাসে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় । শেবের কবিতা “নিৰ্ব্বরিণী” কবিতাটি স্বতন্ত্রভাবে পাঠ্যগ্রন্থে সংকলিত হইলে, কেহ কেহ তাহার অর্থব্যাখ্যানের আবশ্যকতা জ্ঞাপন করিয়া রবীন্দ্রনাথকে পত্র লেখেন। ইমুনীলচন্দ্র সরকারের পত্রের উত্তরে রবীন্দ্রনাথ লেখেন : শেষের কবিতা গ্রন্থে “নির্ঝরিণী" কবিতার বিশেষ উপলক্ষ্যে বিশেষ অর্থ ছিল। তার থেকে বিশ্লিষ্ট করে নেওয়াতে তার একটা সাধারণ অর্থ খুজে বের করা দরকার হয়। আমার মনে হয় সেটা এই যে, আমাদের বাইরে বিশ্বপ্রকৃতির একটি চিরন্তনী ধারা আছে, সে আপন স্বর্ধ-চন্দ্র আলো-আঁধার নিয়ে সর্বজনের সৰ্বকালের । জ্যোতিষ্কলোকের ছায়া দোলে তার ঝরনার ছন্দে । জীবনে কোনো বিপুল প্রেমের আনন্দে এমন একটা পরম মুহূর্ত আসতে পারে, যখন আমার চৈতন্তের নিবিড়ত আপনাকে অসীমের মধ্যে উপলব্ধি করে, তখন বিশ্বের নিত্য-উৎসবের সঙ্গে মানবচিত্তের উংসব মিলিত হয়ে যায়, তখন বিশ্বের বাণী তারই বাণী হয়ে ওঠে। ইতি ৫ বৈশাখ ১৩৪৩ این موسسه به د: