পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

g রবীন্দ্র-রচনাবলী هد হেরো হেরো অবনীর রঙ্গ গগনের করে তপোভঙ্গ । হাসির আঘাতে তার মৌন রহে ন৷ আর কেঁপে কেঁপে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে । বাতাস ছুটিছে বনময় রে, ফুলের না জানে পরিচয় রে । তাই বুঝি বারে বারে কুঞ্জের দ্বারে দ্বারে শুধায়ে ফিরিছে জনে জনে । ফাগুন লেগেছে বনে বনে ॥ ফণগুনের গুণ আছে রে ভাই, গুণ আছে । বুঝলি কী করে। নইলে আমাদের এই দাদাকে বাইরে টেনে আনে কিসের জোরে । তাই তো— দাদা আমাদের চৌপদীছন্দের বোঝাই নৌকো— ফাগুনের গুণে বাধা পড়ে কাগজ-কলমের উলটো মুখে উজিয়ে চলেছে। চন্দ্রহাস । ওরে ফাগুনের গুণ নয় রে । আমি চন্দ্রহাস, দাদার তুলট কাগজের হলদে পাতাগুলো পিয়াল বনের সবুজ পাতার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছি ; দাদা খুজতে বের হয়েছে । তুলট কাগজগুলো গেছে আপদ গেছে কিন্তু দাদার সাদা চাদরটা তো কেড়ে নিতে হচ্ছে । i চন্দ্ৰহাস । তাই তো, আজ পৃথিবীর ধুলোমাটি পর্যন্ত শিউরে উঠেছে আর এ পর্যন্ত দাদার গায়ে বসস্তর আমেজ লাগল না ! দাদা । আহা কী মুশকিল বয়েস হয়েছে যে । পৃথিবীর বয়েস অন্তত তোমার চেয়ে কম নয়, কিন্তু নবীন হতে ওর লজ্জা নেই। চন্দ্রহাস । দাদা, তুমি বসে বসে চৌপদী লিখছ, আর এই চেয়ে দেখে সমস্ত জল স্থল কেবল নবীন হবার তপস্যা করছে। দাদা, তুমি কোটরে বসে কবিতা লেখ কী করে। দাদা। আমার কবিতা তো তোদের কবিশেখরের কল্পমঞ্জরীর মতো শৌখিন কাব্যের ফুলের চাষ নয় যে কেবল বাইরের হাওয়ায় দোল খাবে। এতে সার আছে রে, ভার অাছে । -