পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S\రిన রবীন্দ্র-রচনাবলী চতুর্থ দৃশ্য প্রকাশ «$ट् छ्ब्र দেখ দেখি ভাই, আবার আমাদের ফেলে রেখে চন্দ্রহাস কোথায় গেল । ওকে কি ধরে রাখবার জো আছে । বসে বিশ্রাম করি আমরা, ও চ’লে বিশ্রাম করে। অন্ধ বাউলকে নিয়ে সে নদীর ওপারে চলে গেছে। আর কিছু নয়, ওই অন্ধের অন্ধতার মধ্যে সেঁধিয়ে গিয়ে তবে ও ছাড়বে। তাই আমাদের সর্দার ওকে ডুবুরি বলে। চন্দ্রহাস একটু সরে গেলেই আর আমাদের খেলার রস থাকে না । ও কাছে থাকলে মনে হয় কিছু হোক বা না হোক তবু মজা আছে। এমন-কি বিপদের আশঙ্কা থাকলে মনে হয় সে আরও বেশি মজা । আজ এই রাত্রে ওর জন্যে মনটা কেমন করছে। দেখছিস এখানকার হাওয়াটা কেমনতরো ? | \ এখানে আকাশটা যেন যাবার বেলাকার বন্ধুর মতো মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। যারা সেখানে বলছিল চল চল, তারা এখানে বলছে যাই যাই । কথাটা একই, সুরটা আলাদা । মনটার ভিতরে কেমন ব্যথা দিচ্ছে, তৰু লাগছে ভালো। ঝাউগাছের বীথিকার ভিতর দিয়ে কোথা থেকে এই একটা নদীর স্রোত চলে আসছে, এ যেন কোন দুপুররাতের চোখের জল । পৃথিবীর দিকে এমন করে কখনও আমরা দেখি নি । উর্ধ্বশ্বাসে যখন সামনে ছুটি তখন সামনের দিকেই চোখ থাকে, চারপাশের দিকে নয় । বিদায়ের বঁাশিতে যখন কোমল ধৈবত লাগে তখনই সকলের দিকে চোখ মেলি । আর দেখি বড়ো মধুর। যদি সবাই চলে চলে না যেত তা হলে কি কোনো মাধুরী চোখে পড়ত। চলার মধ্যে যদি কেবলই তেজ থাকত তা হলে যৌবন শুকিয়ে যেত। তার মধ্যে কান্না আছে তাই যৌবনকে সবুজ দেখি ।