পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী যাদের মহিমাগানে জাগালেন বীণারে তারাও সবাই ছিল অধুনার কিনারে। আধুনিকা ছিল নাকো হেন কাল ছিল না, তাহাদেরি কল্যাণে কাব্যানুশীলনা। পুরুষ কবির ভালে আছে কোনো সুগ্ৰহ, চিরকাল তাই তারে এত মহানুগ্রহ। জুতা-পায়ে খালি-পায়ে স্লিপারে বা নূপুরে নবীনারা যুগে যুগে এল দিনে দুপুরে, যেথা স্বপনের পাডা সেন্থা যায় আগিয়ে, প্রাণীটাকে নাড়া দিয়ে গান যায় জাগিয়ে। তবু কবি-রচনায় যদি কোনো৷ ললনা দেখ অকৃতজ্ঞতা, জেনো সেটা ছলনা। ঠোকাঠুকি ক’রে হয় রস-উৎপত্তি। মিষ্ট-কটুর মাঝে কোনটা যে মিথ্যে সে কথাটা চাপা থাক কবির সাহিত্যে। ওই দেখো, ওটা বুঝি হল শ্লেষবাক্য। এরকম বাকা কথা ঢাকা দিয়ে রাখ্য। প্রলোভনীরূপে আসে পরিহাসপটুতা, সামলানো নাহি যায় অকারণ কটুতা। বারে বারে এইমতো করি অত্যক্তি ক্ষমা করে কোরো সেই অপরাধমুক্তি। আর যা-ই বলি নাকে এ কথাটা বলিবই, তোমাদের দ্বারে মোরা ভিক্ষার থলি বই। অন্ন ভরিয়া দাও সুধা তাহে লুকিয়ে, মূল্য তাহারি। আমি কিছু যাই চুকিয়ে। অনেক গেয়েছি গান মুগ্ধ এ প্ৰাণ দিয়ে— তোমরা তো শুনেছি তা অন্তত কান দিয়ে। সে অকালে তোমাদেরি বাণী হয় রোচনা। করুণায় ব’লে থােক, “আহা, মন্দ বা কী।” খুঁটে বের কর না তো কোনো ছন্দ-ফাকি। এইটুকু যা মিলেছে তাই পায় কজনা, য এত লোক করেছে তো ভারতীর ভজনা। এর পর বঁাশি যবে ফেলে যাব ধূলিতে তখন আমারে ভুলো পার যদি ভুলিতে। সেদিন নূতন কবি দক্ষিণপবনে মধু ঋতু মুখরিবে তোমাদের স্তবনেতখন আমার কোনো কীটে-কাটা পাতাতে একটা লাইনও যদি পারে মন মাতাতে