পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী ܢ ܘ ܓ 5R व्पन्नों না চাহিলে যারে পাওয়া যায়, দিবসে সে—ধন হারায়েছি। আমি পেয়েছি আঁধার রাতে । না দেখিবে তারে পরিশিবে না গো, তারি পানে প্ৰাণ মেলে দিয়ে জাগো, তারায় তারায় রবে তারি বাণী, কুসুমে ফুটিবে প্রাতে । তারি লাগি যত ফেলেছি অশ্রদ্ৰুজল বীণাবাদিনীর শতদলদলে করিছে সে টলমল । মোর গানে গানে পলিকে পলকে ঝলসি উঠিছে ঝলকে ঝলকে, শান্ত হাসির করুণ আলোক ভাতিছে নয়নপাতে । সুষমা। (ভূমিষ্ঠ প্ৰণাম করে) প্ৰভু, দুর্বল আমি । মনের গোপনে যদি পাপ থাকে ধুয়ে দাও, মুছে দাও । আসক্তি দূর হােক, জয়যুক্ত হােক তোমার বাণী । পুরন্দর । বৎসে, নিজেকে নিন্দা কোরো না, অবিশ্বাস কোরো না, নাত্মানমবসাদয়েৎ । ভয় নেই, কোনো ভয় নেই। আজ তোমার মধ্যে সত্যের আবির্ভাব হয়েছে মাধুর্যে, কাল সেই সত্য অনাবৃত করবে আপন জগজয়িনী বীর শক্তি । সুষমা । আজ সন্ধ্যায়। এইখানে তোমার প্রসন্নদৃষ্টির সামনে আমার নূতন জীবন আরম্ভ হল । তোমারই পথ হোক আমার পথ । পুরন্দর । তোমাদের কাছ থেকে দূরে যাবার সময় আসন্ন হয়েছে। সুষমা ৷ দয়া করো প্ৰভু, ত্যাগ কোরো না। আমাকে ! নিজের ভার আমি নিজে বহন করতে পারব না । তুমি চলে গেলে আমার সমস্ত শক্তি যাবে তোমারই সঙ্গে । পুরন্দর । আমি দূরে গেলেই তোমার শক্তি তোমার মধ্যে ধ্রুবপ্রতিষ্ঠিত হরে । আমি তোমার হৃদয়দ্বার খুলে দিয়েছি নিজে স্থান নেব বলে নয় । যিনি আমার ব্ৰতপতি-তিনি সেখানে স্থান গ্ৰহণ করুন । আমার দেবতা হােন তোমারই দেবতা, দুঃখকে ভয় নেই, আনন্দিত হও আত্মজয়ী আপনারই NK একটা কথা জিজ্ঞাসা করি, সোমশংকরের মহত্ত্ব তুমি আপন অন্তরের থেকে চিনতে পেরেছ ? সুষমা। পেরেছি। পুরন্দর । সেই দুর্লভ মহত্ত্বকে তোমার দুর্লভ সেবার দ্বারা মূল্যদান করে গীেরবান্বিত করবে, তার বীৰ্যকে সর্বোচ্চ সার্থকতার দিকে আনন্দে উন্মুখ রাখবে, এই নারীর কাজ ; মনে রেখো, তোমার দিকে তাকিয়ে সে যেন নিজেকে শ্রদ্ধা করতে পারে- এই কথাটি ভুলো না । সুষমা। কখনো ভুলব না। পুরন্দর। প্রাণকে নারী পূর্ণতা দেয়, এইজন্যেই নারী মৃত্যুকেও মহীয়ান করতে পারে, তোমার কাছে এই আমার শেষ কথা ।