পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় やbr> “বধূ কবিতার প্রথম ছত্রটির পূর্ববতী কোনো-এক পাঠে পাণ্ডুলিপিতে “ঠাকুরমা’ স্থলে "মুখুজে পাওয়া যায় । ‘জীবনস্মৃতি’তে উল্লিখিত খাজাঞ্চি কৈলাস মুখুজ্যের ছড়া বলার বিবরণটুকু এই প্রসঙ্গে প্ৰণিধানযোগ্য— সেই কৈলাস মুখুজ্যে আমার শিশুকালে অতি দ্রুত বেগে মস্ত একটা ছড়ার মতো বলিয়া আমার মনোরঞ্জন করিত | সেই ছড়াটার প্রধান নায়ক ছিলাম আমি এবং তাহার মধ্যে একটি ভাবী নায়িকার নিঃসংশয় সমাগমের আশা অতিশয় উজলভাবে বর্ণিত ছিল । এই-যে ভুবনমোহিনী বধুটি ভবিতব্যতার কোল আলো করিয়া বিরাজ করিতেছিল, ছড়া শুনিতে শুনিতে তাহার চিত্রটিতে মন ভারি উৎসুক হইয়া উঠিত । আপাদমস্তক তাহার যে বহুমূল্য অলংকারের তালিকা পাওয়া গিয়াছিল এবং মিলনোৎসবের যে অভূতপূর্ব সমারোহের বর্ণনা শুনা যাইত, তাহাতে অনেক প্রবীণবয়স্ক সুবিবেচক ব্যক্তির মন চঞ্চল হইতে পারিত— কিন্তু বালকের মন যে মাতিয়া উঠিত এবং চোখের সামনে নানা বর্ণে বিচিত্র আশ্চর্য সুখচ্ছবি দেখিতে পাইত তাহার মূল কারণ ছিল সেই দ্রুত-উচ্চারিত অনগল শব্দচ্ছটা এবং ছন্দের দোলা । —জীবনস্মৃতি, শিক্ষারম্ভ অধ্যায় “শ্যামা’ ও ‘কাচা আম কবিতা দুইটি তথ্যের বিচারে জুড়ি কবিতা । এই প্রসঙ্গে ‘জীবনস্মৃতি’তে বধূসমাগমের সংক্ষিপ্ত বিবরণটুকু তুলনীয়— তাহার পরে গলায় সোনার হাবটি পরিয়া বাড়িতে যখন নববধূ আসিলেন তখন অন্তঃপুরের রহস্য আরো ঘনীভূত হইয়া উঠিল । যিনি বাহির হইতে আসিয়াছেন। অথচ যিনি ঘরের, র্যাহাকে কিছুই জানি না। অথচ যিনি আপনার, তাহার সঙ্গে ভােব করিয়া লইতে ভারি ইচ্ছা করিত । —জীবনস্মৃতি, প্ৰত্যাবর্তন অধ্যায় পাণ্ডুলিপিতে “শ্যামা’ কবিতার ষষ্ঠ ও সপ্তম পঙক্তির নিম্নরূপ আদিপাঠ পাওয়া যায়— তেবো-চোদ্দ বছরের মেয়ে, বারো ছিল বয়স আমার । “জানা-অজানা” কবিতার ‘প্রবাসী’তে-প্রকাশিত পাঠে সর্বশেষ দুইটি অতিরিক্ত ছত্র মুদ্রিত হইয়াছিল--- তাহাতে আভাসে থাকে চরমের কথা, অস্তগিরিশিখরের নক্ষত্রের রহস্যবারতা । “যাত্ৰা” কবিতাটিতে যে স্মৃতিচিত্র বর্ণিত হইয়াছে সেই প্রসঙ্গে "য়ুরোপ-যাত্রীর ডায়ারি গ্রন্থের দ্বিতীয় খণ্ড বা ভ্ৰমণের ডায়ারির (বিচিত্ৰ প্ৰবন্ধ : য়ুরোপ-যাত্রী) ‘শুক্রবার । ২২শে আগস্ট ১৮৯০ তারিখের অংশটি রবীন্দ্র-রচনাবলীর সুলভ প্রথম খণ্ডে ৮৩৫-৩৬ পৃষ্ঠায় দ্রষ্টব্য । ‘সময়হারা’ কবিতার প্রবাসী’তে প্ৰকাশিত পাঠের সূচনায় ছিল— ডাক্তারেতে বলে যখন "মরেছে এই লোক’ তাহার তরে মিথ্যা করা শোক, কিন্তু যখন বলে ‘জীবনমৃত্যু সেটা শোনায় তিতো । নালিশ তবু নাই । বর্তমান গ্রন্থের ৮৫ পৃষ্ঠার ‘কখনো বা হিসাব ভুলে’ ইত্যাদি। ২৮-৩১ সংখ্যক ছত্ৰ ‘প্রবাসী’তে নাই ; অপর পক্ষে ৮৭ পৃষ্ঠার ৩০ ছত্ৰে য়ে-স্তবকের শেষ তাহার অনুবৃত্তিস্বরূপ পাওয়া যায়—