পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আকাশপ্ৰদীপ৷ যত দূরে শিরীষের উর্ধর্বশাখা যেথা হতে ধীরে স্বামীণ গন্ধ নেমে আসে প্ৰাণের গভীরে । একদিন পুতুলের বিয়ে, পত্র গেল দিয়ে । কলরব করেছিল হেসে খেলে নিমন্ত্রিত দল । আমি মুখচোরা ছেলে একপাশে সংকোচে পীড়িত ৷ সন্ধ্যা গেল বৃথা, পরিবেশনের ভাগে পেয়েছিনু মনে নেই। কী তা । দেখেছিনু, দ্রুতগতি দুখানি পা আসে যায় ফিরে, কালো পাড় নাচে তারে ঘিরে । দুহাতে পড়েছে যেন বাধা । অনুরোধ উপরোধ শুনেছিনু তার স্নিগ্ধ স্বরে । ফিরে এসে ঘরে মনে বেজেছিল তারি। প্ৰতিধবনি অর্ধেক রজনী । তার পরে একদিন জানাশোনা হল বাধাহীন । একদিন নিয়ে তার ডাকনাম তারে ডাকিলাম । একদিন ঘুচে গেল। ভয়, পরিহাসে পরিহাসে হল দোহে কথা-বিনিময় । কখনো—বা গড়ে—তোলা দোষ ঘটায়েছে ছাল-করা রোষ । কখনো—বা শ্লেষবাক্যে নিষ্ঠুর কৌতুক হেনেছিল দুখ । কখনো বা দিয়েছিল অপবাদ অনাবধানের অপরাধ । কখনো দেখেছি তার অযত্বের সাজ রন্ধানে ছিল সে ব্যস্ত, পায় নাই লাজ । পুরুষসুলভ মোর কত মুঢ়তারে ধিককার দিয়েছে নিজ স্ত্রীবুদ্ধির তীব্ৰ অহংকারে । একদিন বলেছিল, “জানি হাত দেখা ।” হাতে তুলে নিয়ে হাত নতশিরে গনেছিল রেখা বলেছিল, “তোমার স্বভাব প্রেমের লক্ষণে দীন ।” দিই নাই কোনোই জবাব । পরিশের সত্য পুরস্কার খণ্ডিয়া দিয়েছে দোষ মিথ্যা সে নিন্দার । Avd