পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

86SR রবীন্দ্র-রচনাবলী निनि এ একটি ছবি। বালিকাবয়সী দিদি। তার মনে মাতৃস্নেহ রয়েছে বিকশিত; সে বাইরে কাজকর্ম করতে যাওয়া আসা করে, সঙ্গে নিয়ে বেড়ায় শিশু ভাইটিকে। ছেলেটা খেলা করে আপন মনে, দিদি কাছাকাছি কোথাও আছে। এইটি জানলেই সে নিশ্চিন্ত। এই অত্যন্ত সরল কবিতাটি যদি তোমাদের ভালো লাগে। তবে কেন লাগে লেখে। সম্পর্শমণি ভিক্ষুক ব্ৰাহ্মণ যখন দেখলে সনাতন স্পর্শমণিকে নিম্পূহমানে উপেক্ষা করলেন তখন বুঝতে পারলে যে, লোভেই এই পাথরটাকে মিথ্যে দাম দিয়ে মনকে আসক্ত করে রেখেছে। লোভকে সরিয়ে নিলেই এটা হয় ঢেলা মাত্র। লোভ কখন চলে যায় ? বিবাহ রাজপুতানার ইতিহাস থেকে এই গল্পটি নেওয়া। বিবাহসভায় মেত্রির রাজকুমারকে যুদ্ধে আহবান, বিবাহ অসমাপ্ত রেখে বরের যাত্ৰা রণক্ষেত্রে। তার অনতিকাল পরে বিবাহের সাজে চতুৰ্দোলায় চড়ে বধুর গমন মেত্রিরাজপুরে, সেখানে যুদ্ধে নিহত কুমার তখন চিতাশয্যায়। সেইখানেই মৃত্যুর মিলনে বরকন্যার অসম্পূর্ণ বিবাহের পরিসমাপ্তি। কল্পনায় সমস্ত ব্যাপারটিকে আগাগোড়া উজ্জ্বল ক'রে মনের মধ্যে জাগিয়ে দেওয়াই এই কবিতার সার্থকতা। বিবাহসভায় বরের প্রতি যুদ্ধের আহবান এবং বিবাহের প্রতিহত প্রত্যাশায় কন্যার মৃত্যুকে বরণ এই দুই আকস্মিকতার নিদারুণতায় এই কবিতার রস। এক দিকে করুণতা অন্য দিকে বীর্য মহিমালাভ করেছে তারই ব্যাখ্যা করো। আষাঢ় আষাঢ়ে বৰ্ষা নেমেছে। পল্পীজীবনের একটি উদবেগের চাঞ্চলের উপর এই ছবিটি ঘনিয়ে উঠেছে। সেই উদবেগের কী রকম বর্ণনা করা হয়েছে মনের মধ্যে,এঁকে নিয়ে তোমাদের ভাষায় প্রকাশ করো। নগরলক্ষ্মী শ্রাবন্তীপুরীতে দুর্ভিক্ষ যখন দেখা দিল, বুদ্ধদেব তার শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন এ নগরীর ক্ষুধা-নিবারণের ভার কে নেবে। তাদের প্রত্যেকের উত্তর শুনে বোঝা গেল স্বতন্ত্র ব্যক্তিগতভাবে কারও সাধ্য নেই এই গুরুতর কর্তব্য সম্পন্ন করা। তখন অনাথাপিণ্ডদের কন্যা ভিক্ষুণী সুপ্রিয়া বললেন, এই ভার আমি নেব। ভিক্ষুণী আপনি নিঃস্বতা সত্ত্বেও এই গুরুভার নিলেন কিসের জোরে। বিম্ববতী সুন্দরকে যে নারী সৌন্দর্যে ছাড়িয়ে যেতে চায় সে কি সুন্দরের বিপরীত মনােভাব ও চেষ্টা দ্বারা জগতে কৃতকার্য হতে পারে। সেই প্ৰয়াসে ফল হল কী। কর্ম কর্মের বিধান নিষ্ঠুর। মানুষের নিবিড়তম বেদনার উপর দিয়েও তার রথচক্ৰ চ'লে যায়। এই কবিতায় যে ভুতাটির কথা আছে রাত্রে তার মেয়েটি মারা গেছে, তবু কাজের দাবি থেকে তার নিষ্কৃতি নেই। কিন্তু এই কবিতায় যে সকরুণতা প্ৰকাশ পেয়েছে সেটা কেবল এ নিয়ে নয়। সকাল বেলায় কয়েক ঘণ্টা কাজে যোগ দিতে তার দেরি হয়েছিল সেইজন্য মনিব যখন ক্রুদ্ধ ও অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছিলেন ঠিক সেই সময় মেয়েটির মৃত্যুসংবাদ পাবামাত্র মনিব লজিঞ্জিত হলেন। প্ৰভু মনিবের ভেদের উপরেও কোন এক জায়গায় উভয়ের গভীর ঐক্য প্রকাশ পেল? সামান্য ক্ষতি কাশীর রাজমহিষী যখন সামান্য এক ঘণ্টার কৌতুকে গরিব প্রজাদের কুটিরে আগুন লাগিয়ে