পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లిe রবীন্দ্র-রচনাবলী পরীক্ষা করতে করতে প্রায় চল্লিশটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ পাওয়া গেছে। প্রায় এদের সবগুলিই বিজ্ঞানে নতুন জান। g . . . তখনকার দিনে সকলের চেয়ে চমক লাগিয়ে দিল এই ধাতুর একটি অদ্ভুত স্বভাব। সে নিজের মধ্যে থেকে জ্যোতিক্ষণ বিকীর্ণ করে নিজেকে নানা মৌলিক পদার্থে রূপান্তরিত করতে করতে অবশেষে সীলে করে তোলে। এ ধেন একটা বৈজ্ঞানিক ভেলকি বললেই হয়। এক ধাতু থেকে অন্য ধাতুর যে উদ্ভব হতে পারে, সে এই প্রথম জানা গেল । যে-সকল পদার্থ রেডিয়মের এক জাতের, অর্থাৎ তেজ-ছিটোনোই যাদের স্বভাব তারা সকলেই জাত-খোওয়াবার দলে। তার কেবলই আপনার তেজের মূলধন খরচ করতে থাকে। এই অপব্যয়ের ফদে প্রথম যে তেজঃপদার্থ পড়ে, গ্রীকবর্ণমালার প্রথম অক্ষরের নামে তার নাম দেওয়া হয়েছে আলফ। বাংলা বর্ণমালা ধরে তাকে ক বললে চলে। এ একটা পরমাণু, পজিটিভ জাতের। রেডিয়মের আরও একটা ছিটিয়ে-ফেলা তেজের কণা আছে, তার নাম দেওয়া হয়েছে বীট, বলা যেতে পারে খ । সে ইলেকট্রন, নেগেটিভ চার্জ করা, বিষম তার দ্রুত ৰেগ তবু পাতলা একটি কাগজ চলার রাস্তায় পড়লে আলফা-পরমাণু দেহান্তর লাভ করে, সে হয়ে ষায় হলিয়ম গ্যাস। আরও কিছু বাধা লাগে বীটাকে থামিয়ে দিতে। রেডিয়মের তুণে এই দুইটি ছাড়া আর-একটি রশ্মি আছে তার নাম গামা । সে পরমাণু বা অতিপরমাণু নয়, সে একটি বিশেষ আলোকরশ্মি। তার কিরণ স্থল বস্তুকে ভেদ করে যেতে পারে, যেমন যায় র্যণ্টগেন রশ্মি । এইসব তেজস্কণার ব্যবহার সকল অবস্থাতেই সমান, লোহা-গলানো গরমেও, গ্যাস-তরল-করা ঠাণ্ডাতেও । তা ছাড়া তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আবার পূর্বের মতে দান বেঁধে দেওয়া কারও সাধ্য নেই। পরমাণুর কেন্দ্ৰ-পিওটিতে যতক্ষণ না কোনো লোকসান ঘটে ততক্ষণ দুটাে-চারটে ইলেকট্রন যদি ছিনিয়ে নেওয়া যায় তা হলে তার বৈদ্যুতের বাধা বরাদে কিছু কমতি পড়তে পারে কিন্তু অপঘাতটা সাংঘাতিক হয় না। যদি ঐ কেন্দ্রবস্তুটার খাস তহবিলে লুটপাট সম্ভব হয় তা হলেই পরমাণুর জাত বদল হয়ে যায়। 響 পরমাণুর নিজের মধ্যে একান্ত ঐক্য নেই এ-খবরটা পেয়েই বিজ্ঞানীরা প্রথমটা আশা করেছিলেন যে, তারা তেজ-ছুড়ে-মারা গোলন্দাজ রেডিয়মকে লাগাবেন পরমাণুর মধ্যে ভেদ ঘটিয়ে তার কেন্দ্ৰসম্বলভাঙী লুটপাটের কাজে। কিন্তু লক্ষ্যটি অতিক্ৰন্থ, নিশান করা সহজ নয়, তেজের ঢেল বিস্তর মারতে মারতে দৈবাৎ একটা লেগে যায়। তাই এ-রকম অনিশ্চিত লড়াইপ্রণালীর বদলে আজকাল প্রকাণ্ড যন্ত্র তৈরির আয়োজন