পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন্ন্যাসী । বালিকা । সন্ন্যাসী । প্রকৃতির প্রতিশোধ নবম দৃশ্য গুহায় সন্ন্যাসী আহা এ কী শান্তি, এ কী গভীর বিরাম ! অন্তর বাহির যাবে, যাবে দেশ কাল‘আছি’ মাত্র রবে শুধু, আর কিছু নয় । দীপ হস্তে বালিকার প্রবেশ দুই দিন দুই রাত্রি চলে গেছে পিতা, গুহার দুয়ারে আমি বসিয়া রয়েছি, তাই আজ একবার এসেছি দেখিতে । একটিও জনপ্ৰাণী আসে নি হেথায়, কেন হেথা অন্ধকারে একা বসে আছ ! কতক্ষণ বসে বসে শুনিনু সহসা তুমি যেন মেহবাক্যে ডাকিছ আমারে । নিতান্ত একেলা তুমি রয়েছ যে পিতা— তাই আর পারিনু না, আসিলাম কাছে । ওকি প্ৰভু, কথা কেন কহিছনা তুমি ! ও কী ভাবে চেয়ে আছ মোর মুখপানে ! ভালো লাগিছে না। পিতা ? যাব। তবে চলে ? না না, এলি যদি, তবে যাস নে চলিয়া । আমি তো ডাকি নি তোরে, নিজে এসেছিস । একটুকু দাড়া, তোরে দেখি ভালো করে । সংসারের পরপারে ছিলেম যে আমি, সহসা জগৎ হতে কে তোরে পাঠালে ? সেথা হতে সাথে করে কেন নিয়ে এলি দিবালোক, পুষ্পগন্ধ, স্নিগ্ধ সমীরণ ! কিবা তোর সুধাকণ্ঠ, মেহমাখা স্বর ! মরি কী অমিয়াময়ী লাবণ্যপ্রতিমা ! সরলতময় তোর মুখখানি দেখে জগতের পরে মোর হতেছে বিশ্বাস । তুই কি রে মিথ্যা মায়া, দুদণ্ডের ভ্ৰম ! জগতের গাছে তুই ফুটেছিস ফুল, জগৎ কি তোরি মতো এত সত্য হবে ! চল বাছা, গুহা হতে বাহিরেতে যাই । সমুদ্রের এক পারে রয়েছে জগৎ, মাঝেতে রহিলি তুই সোনার তরণী— ○br>