পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপৰ্ণা । জয়সিংহ । অপর্ণা । জয়সিংহ । অপৰ্ণ । জয়সিংহ । অপর্ণা । বিসর্জন ওই মধুকণ্ঠে তোর, ওই মধু-আঁখি রেখে মোর মুখপানে, এই জনহীন স্তব্ধ। রজনীতে, এই বিশ্বজগতের নিদ্ৰামাঝে, বল রে অপর্ণা, যা শুনিলে মনে হবে চারিদিকে আর কিছু নাই, শুধু ভালোবাসা ভাসিতেছে, পূর্ণিমার সুপ্তিরাত্রে রজনীগন্ধার গন্ধসম । হায় জয়সিংহ, বলিতে পারি। নে কিছুবুঝি মনে আছে কত কথা । VGIK TOGS কাছে আয়, মন হতে মনে যাক কথাএ কী করিতেছি আমি ! অপৰ্ণা, অপর্ণা, চলে যা মন্দির ছেড়ে ! গুরুর আদেশ ! জয়সিংহ, হােয়ো না নিষ্ঠুর ! বারবার ফিরায়ো না ! কী সহোছি অন্তর্যামী জানে ! তবে আমি যাই । এক দণ্ড হেথা নহে । কিয়দদূর গিয়া ফিরিয়া অপর্ণা, নিষ্ঠুর আমি ? এই কি রহিবে কখনো কি হাসিমুখে কহি নাই কথা ? কখনো কি ডাকি নাই কাছে ? কখনো কি ফেলি নাই। অশ্রািজল তোর অশ্রু দেখে ? অপর্ণা, সে-সব কথা পড়িবে না মনে, শুধু মনে রহিবে জাগিয়া জয়সিংহ নিষ্ঠুর পাষাণ ? যেমন পাষাণ ওই পাষাণের ছবি, দেবী বলিতাম যারে ?-- হায় দেবী, তুই যদি দেবী হইতিস, তুই যদি বুঝিতিস এই অন্তৰ্দাহ! বুদ্ধিহীন ব্যথিত। এ ক্ষুদ্র নারী-হিয়া, ক্ষমা করে এরে । এই বেলা চলে এসো, জয়সিংহ, এসো মোরা এ মন্দির ছেড়ে যাই । রক্ষা করো ! অপৰ্ণা, করুণা করে । দয়া করে, মোরে ফেলে চলে যাও । এক কাজ বাকি আছে এ জীবনে, সেই হােক প্ৰাণেশ্বর- তার স্থান তুমি কাড়িয়ে না । [প্রকৃত প্ৰস্থান শতবার সহিয়াছি, আজ কেন আর নাহি সহে ! আজি কোন ভেঙে পড়ে প্ৰাণ ! (bro