পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰভাতসংগীত প্ৰভাত-উৎসব হৃদয় আজি মোর কেমনে গেল খুলি ! জগত আসি সেন্থা করিছে কোলাকুলি ! ধরায় আছে যত মানুষ শত শত আসিছে প্ৰাণে মোর, হাসিছে গলাগলি । এসেছে সখা সখী বসিয়া চোখোচোখি, দাড়ায়ে মুখোমুখি হাসিছে শিশুগুলি । এসেছে ভাই বোন পুলকে ভরা মন, ডাকিছে, “ভাই ভাই আঁখিতে আঁখি তুলি । সখীরা এল ছুটে, নয়নে তারা ফুটে, পরানে কথা উঠে- বচন গেল ভুলি । সখীরা হতে হাতে ভ্ৰমিছে সাথে সাথে, দোলায় চড়ি তারা করিছে দোলাদুলি । শিশুরে লয়ে কোলে জননী এল চলে, বুকেতে চেপে ধরে বলিছে ‘ঘুমে ঘুমো” । আনত দু’নয়ানে চাহিয়া মুখপানে বাছার চাদমুখে খেতেছে শত চুমো । পুলকে পুরে প্রাণ, শিহরে কলেবর, প্রেমের ডাক শুনি এসেছে চরাচরএসেছে। রবি শশী, এসেছে কোটি তারা, ঘুমের শিয়রেতে জাগিয়া থাকে যারা । পরান পুরে গেল হরষে হল ভোর জগতে যারা আছে সবাই প্ৰাণে মোর । প্ৰভাত হল যেই কী জানি হল এ কী ! আকাশপানে চাই কী জানি করে দেখি ! প্রভাতবায়ু বহে কী জানি কী যে কহে, মরমমাঝে মোর কী জানি কী যে হয় ! এসো হে এসে কাছে সখা হে এসে কাছে— এসো হে ভাই এসো, বোসো হে প্ৰাণময় । অরুণরথচূড়া আধোক যায় দেখা । তরুণ আলো দেখে পাখির কলরবমধুর আহা কিবা মধুর মধু সব ! মধুর মধু আলো, মধুর মধু বায়, মধুর মধু গানে তটিনী বয়ে যায় ! যে দিকে আঁখি চায় সে দিকে চেয়ে থাকে, যাহারি দেখা পায় তারেই কাছে ডাকে, হৃদয় ডুবে যায় হরষ-পারাবারে । (?(?