পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

GSS झदैीक्षा-दा5न्ादी আমি কোনোদিনও ওস্তাদিয়ানার জালে বাধা পড়ি নি। আড়ালে-আবডালে থেকে যেটুকু শিখেছি সেটুকুই আমার শেখা। বারান্দা পার হতে গিয়ে কিংবা জানালার ও পাশে বসে থাকার কালে যেসব সুর ভেসে আসত কানে সেগুলোই মনের ভিতর গুঞ্জরণ করে ফিরত প্রতিনিয়ত। তার থেকেই পেয়েছি আমি গানের প্রেরণা। বর্ষার দিনে ভিতরে ভূপালী সুরের আলাপ চলেছে, আমি বাইরে থেকে শুনছি। আর, কী আশ্চর্য দেখো, পরবর্তী জীবনে আমি যত বর্ষার গান রচনা করেছি তার প্রায় সব-কাটিতেই অদ্ভুতভাবে এসে গেছে। ভূপালী সুর। কাজেই বুঝেছ- সংগীতশিক্ষাটা আমার সংস্কারগত, ধরাবাঁধা রুটিনমাফিক নয়। ] ‘ছোটোবেলায়... আমার গলা খুব ভালো ছিল। সেকালের সেরা ওস্তাদ যদুভট্ট-অত বড়ো গাইয়ে বাংলায় আজ পর্যন্ত হয়েছে কি না সন্দেহ- আমাদের বাড়ির সভাগায়ক ছিলেন। তিনি কত চেষ্টা করেছিলেন আমাকে গান শেখাবার জন্যে, কিন্তু মেরে-কেটেও আমাকে বাগ মানাতে পারেন নি। সে ধাতের ছেলেই আমি নই। কোনো রকম শেখার ব্যাপারে আমার টিকিটও খুঁজে পাবার জো ছিল না।... ...স্কুল কলেজে শিক্ষা হতেও পারে না। এই-যে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগীতশিক্ষার ব্যবস্থা হচ্ছে এর সম্পর্কে আমি খুব আশান্বিত নই। কেননা, শিল্পের ক্ষেত্রে ব্যাপক ব্যবস্থার কোনো দাম নেই। যে প্রেরণা থেকে প্রকৃত গানের জন্ম ক্লাসরুমের চতুঃসীমার ভিতর কেউ তা পেতে পারে না। স্বরলিপিপরিচয় কিংবা ধরাবাঁধা কয়েকটা গান শেখাতেই ঐ ব্যবস্থার সমস্ত কৃতিত্ব যাবে ফুরিয়ে। দল পাকিয়ে শিক্ষা হয় না, শিক্ষাকে কার্যকরী করতে হলে ছােটােখাটাে শ্রেণীবিভাগের পরে ...বাংলাদেশের মাটিতে আছে ফলপ্ৰসু কল্পনার বীজ, তাই বাঙালির রয়েছে অনন্ত সম্ভাবনা। এই জেনারেশানের হাত থেকে হয়তো খুব বেশি-কিছু পাওয়া যাবে না, কিন্তু পরবতী কালকে দাবিয়ে রাখবে কে? এটা আমি কিছুতেই ভেবে পাই নে নিরবচ্ছিন্ন রাজনীতির চর্চাতেই কী করে দেশ উদ্ধার পেতে পারে। শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, নাচ, গান, এদের কি কিছু দাম নেই? আনন্দকে অপাঙক্তেয় করে রেখে এমন কী চতুর্বর্গ ফল লাভ হবে বুঝি নে। দেশের অস্থিমজ্জায় আনন্দকে চারিয়ে তোলো, তাতে সব দিক থেকেই লাভ হবে, এমন-কি রাজনীতির দিক থেকেও '. G Z<strof3s to S s, zfé > xsetyo ...হিন্দুস্থানী সংগীত আমি সর্বািন্তঃকরণে ভালোবাসি- আজ বলে নয়, বাল্যকাল থেকেই। মনে করি ভালোবাসা উচিত। প্রতি সুন্দর সৃষ্টি পুরানো হলেও রসিকের মনে আনন্দের সাড়া তুলবে এই তো হওয়া উচিত। র্যারা সত্যিকার ভালো হিন্দুস্থানী গান শুনেও বলেন ‘ও কী তা-না-না- না। মেও মেও, বাপু, ও ভালো লাগে না- তাদেরকে আমি বলব, “তোমাদের ভালো লাগে না এজন্যে তোমাদের সঙ্গে তর্ক করব না- কেননা, রুচি নিয়ে তর্ক নিৰ্ম্মফল- কেবল বলব তোমরা এ কথা সগৌরবে বোলো না লক্ষ্মীটি!” কারণ, ভালো জিনিস ভালো না লাগাটা লজ্জারই বিষয়, গৌরবের নয়। সুতরাং, শ্রেষ্ঠ শ্রেণীর হিন্দুস্থানী সংগীত যখন সত্যিই সংগীতের একটি মহৎ বিকাশ, তখন সেটা যদি তোমাদের কারুর ভালো না”ও লাগে তো সলজেন্দ্রই বোলো- ‘লাগল না’, বোলো-“ও রসের রসিক হবার কোনো সাধনাই করি নি বা করবার সময় পাই নি- নইলে লগত নিশ্চয়ই’ । .