পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহারাণী শরৎসুন্দরীর জীবন-চরিত। $२१ মহারাণী, কাশীধামে গমন করিবার সময়ে যদিও, কুমার মাতার আদেশ লঙ্ঘন করিয়া তাহার সঙ্গে যাইতে পারেন নাই, কিন্তু মহারাণী বারাণসী যাত্রা করার পর, মাতৃভক্ত কুমার, মাতৃদর্শন লালসায় এত ব্যাকুল হইলেন যে, কাহারও কথা না শুনিয়া হঠাৎ কাশীধামে গমন করিয়া মাতৃচরণ দর্শনে কৃতার্থ হইলেন । কুমারের সেই যাত্রাই শেষ যাত্র। মহারাণী, পুত্রের অনেক প্রকার চিকিৎসা করাইলেন। কিছুতেই পীড়ার উপশম হইল না। অবশেষে ১২৯০ বঙ্গাব্দের ১৮ই ফাঙ্কন তারিখে ছয় মাসের গর্ভবতী বালিকা পত্নী রাখিয়া কুমার মোক্ষধাম কাশীলাভ করিলেন। কুমারের স্বর্গারোহণ অন্তে মহারাণী, তাহার উইলের বিষয় অবগত হইয়া নিতান্ত ক্ষুঃ চিত্ত হইলেন। মহারাণীর আপনার গর্ভে সস্তান না জন্মিলেও দত্তকের অসাধারণ মাতৃভক্তিতে প্রকৃত পুত্রবর্তী হইয়াছিলেন। বিধাতা, সেই পুত্রকেও অকালে গ্রহণ করিলেন। তখন আর তিনি কাশীধাম ত্যাগ করিয়া সম্পত্তির কার্য্য চালনা করিতে কিছুতেই স্বীকৃত হইলেন না । তিনি, বধুরাণীর পিতা প্রভৃতি আত্মীয়গণকে আনাইয়া এই প্রস্তাব করিলেন যে, বধুরাণী বয়ঃপ্রাপ্ত হইতে যে কাল অবশিষ্ট আছে, সে কাল পর্য্যন্ত সম্পত্তি কোর্ট অব ওয়ার্ডেশের তত্ত্বাধীনে রাখাই ভাল বোধ করেন । কিন্তু, তাহার। কিম্বা পুঠিয়া রাজধানীর হিতৈষী কোন ব্যক্তিই এ পরামর্শে সম্মত হইলেন না । সকলেই এক বাক্যে র্তাহার হস্তে সম্পত্তি রাখিবার অনুরোধ করিতে লাগিলেন । ফলতঃ তিনি কোন অনুরোধেই বাধ্যা না হইয়া সম্পত্তি কোর্ট অব ওয়ার্ডেশের তত্ত্বাধীনে দিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। কিন্তু, গবর্ণমেণ্ট, মহারাণীর মহীয়সী কীৰ্ত্তি, এবং অনন্যসাধারণ গুণ পরম্পরায় বিশেষ সন্তুষ্ট ছিলেন ।