পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহারাণী শরৎসুন্দরীর জীবন-চরিত। 3*) পুঠিয়ার রাজাগণ, বারেন্দ্র শ্রেণীর কুলীন, বাগছি বংশের প্রতিষ্ঠাতা সাধুর সস্তান , সাধু হইতে পঞ্চদশ পুরুষ পর, শশধর পাঠক নামে একজন নিষ্ঠাচারী ব্রাহ্মণ জন্মগ্রহণ করেন। শশধরের বৎসাচাৰ্য্য নামে এক পুত্র জন্মে। বৎসাচার্য্য, এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা । তিনি নানা শাস্ত্রবিও নিষ্ঠাচারী পণ্ডিত ছিলেন । তন্ত্র এবং জ্যোতিষে র্তাহার বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল। তিনি গৃহস্থ হইয়াও সন্ন্যাসী, ছিলেন। * . বৎসাচার্য্যের সাতটা পুত্র ;–নীলাম্বর, পীতাম্বর, এবং পুষ্কর্যক্ষ ব্যতীত, আর চারি পুত্রের অকাল মৃত্যু হয় । বৎসাচার্য্য, শেষ বয়সে গৃহাশ্রম একরূপ ত্যাগ করিয়াছিলেন। পুঠিয়ার প্রায় চারি মাইল পূৰ্ব্ব দিকে চন্দ্রকলা গ্রামে বৎসাচার্য্যের নিবাস ছিল। প্রবাদ আছে যে, এই সময়ে বাঙ্গালার জনৈক সুবাদার (বখর খাকি ? ) অবাধ্য হইয়া, দিল্লী সিংহাসন হইতে বঙ্গদেশকে বিচ্ছিন্ন করিবার চেষ্টা করেন । তাহাকে সাশন জন্য, দিল্লীশ্বর ( গয়াস উদ্দীন টোগলগ, হইলেও হইতে পারেন ) স্বয়ং সসৈন্তে, ঢাকা নগরের অভিমুখে যাত্রা করেন। পথে, চন্দ্রকলা গ্রামে র্তাহার শিবির সন্নিবেশিত হয় । দিল্লীশ্বর, লোক মুখে বৎসাচার্য্যের অদ্ভূত ক্ষমতার বিষয় অবগত হইয়া, আচার্য্যের সহিত সাক্ষাৎ করেন, এবং তাহর ভবিষ্যৎ ভাগ্য সম্বন্ধে দুইটা প্রশ্ন করেন । আচাৰ্য্য, তদুহুরে বলেন যে—“বঙ্গদেশ পুনরায় সম্রাটের শাসনাধীন হইবে, অবাধ্য সুবাদারও স্বকৰ্ম্মেই থাকিবেন। আর, এক বৎসরের মধ্যেই সম্রাটের আয়ুস্কাল শেষ হইবে ;—তিনি, কোন আত্মীয়ের ষড়যন্ত্রে অপঘাত মৃত্যুর বশীভূত হইবেন।”

  • কুলগুদিগের গ্রন্থ, ও প্রবাদ অবলম্বন বাতীত, এই রাজবংশের সম্পত্তি লাভের বিবরণ সংগ্রহের অন্ত উপায় নাই। লেখক, বিস্তর অনুসন্ধানে যতদুর সাধ্য, ইহার সতত আবিষ্কারের প্রয়াস পাইয়াছে ।