পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8७ মহারাণী শরৎসুন্দরীর জীবন-চরিত। এবং অতি সস্তপণে বালিকার রুচি ও চেষ্টা পরীক্ষা করিতেও ক্রটা করিতেন না । পরীক্ষা দ্বারা তিনি অল্পদিনেই জানিতে পারিলেন যে, এই ছয় বৎসরের বালিকা, খেলা করিতে কিম্বা বস্ত্র অলঙ্কারের পারিপাট্যে মুগ্ধা নহেন। বালিকা, দরিদ্রকে দান, অতিথি সেবা এবং দেবকাৰ্য্যাদি ব্যপদেশে সকলকে ভোজন করাইতে বড়ই আগ্রহশীলা । সুতরাং যোগেন্দ্রনারায়ণ, অতি হৃষ্ট চিত্তে বালিকার সেই সকল অভিলাষ পূর্ণ করিতে লাগিলেন। যোগেন্দ্র নারায়ণের প্রদত্ত উপাদেয় খাদ্য, বালিকা, সকলকে বিতরণ না করিয়া খাইতেন ন। ভাল একখানি কাপড়, অল্পদিন পরিয়াই কোনও দরিদ্রকে দিতেন। এই সময়ে যোগেন্দ্র নারায়ণের সমবয়স্ক কতিপয় বালক, তাহার সঙ্গে একত্র থাকিয়া বিদ্যাভাস করিতেন। শরং সুন্দরী, সেই বিধবা ঠাকুরাণীর সহায়তায় তাহাদিগের সর্বদা তত্ত্বাবধান করিতেন ।* প্রস্তাবিত সৎকৰ্ম্ম সকলের অনুষ্ঠানে শরৎসুন্দরী, বড়ই আনন্দ =خچج-------

  • যোগেন্দ্র নারারায়ণের সেই সময়ের একজন স্বহাধ্যায়ী সহচর, একদিন লেখকের নিকট, শরৎকুন্দরীর গুণকীৰ্ত্তন করিতে করিতে কান্দিয় বলিলেন, যে, ছয় সাত বৎসরের বালিকার হৃদয়ে এত দয়া, এত পর দুঃখ কাতরতা, এত তাগ স্বীকার ছিল যে, অনেক সময় তাহ ভোজ বিদ্যার ভেলকীর স্থায় বোধ হইত। অন্ত লোকে শুনিয়৷ তাহা বিশ্বাস করিতে পারেন না । রাজা যোগেন্দ্রনারায়ণ, আমার বয়সের কিছু বড় হইলেও, তিনি আমাকে বয়স্তের স্তায় দেখিতেন। অন্তঃপুরে যাইতে আমার বাধ। ছিল না। বরং পীড়ি ত হইলে অন্তঃপুরেই থাকিতাম । একবার আমি প্রবল জ্বরে বড়ই কাতর হইয়াছিলাম। সেই বিধবা ঠাকুরাণী আমাকে সৰ্ব্বদাই দেখিতেন, তথাপি বালিক। শবৎসুন্দরী, অবগুণ্ঠনে আবুত হইয়! সহোদরার স্তায় আমার শুশ্রষ। করিয়াছিলেন । আমার জষ্ঠ, তাহার সময়ে স্নান আহার পর্যান্ত ছিল না । ইহা ভিন্ন তিনি, প্রবীণার ন্যায় দুই সন্ধা। আমাদিগের অভাবের তত্ত্ব লইতেন । সাত বৎসরের বধূ রাণীর কার্য তৎপরতায় আমাদের আঠার, জলখাবার কিম্ব পীড়ার সময় ঔষধ পথাদির জন্য কোন কষ্টই হইত না । ।