পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহারাণী শরৎসুন্দরীর জীবন-চরিত। е 99 থাকিতে,—আমার দেহে জীবন থাকিতে এই মহৎ ব্রত ত্যাগ করিব না। তুমি জান, ইংরেজ অধিকারের অনেক পূৰ্ব্ব হইতে আমার পুরুষানুক্রমিক স্বত্বভোগের পৈতৃক সম্পত্তি, পৈতৃক বাস্তুভূমি। আমি সেই বাস্তুভূমিতে জন্মিয়, এই সমস্ত নিরীহ প্রজার প্রদত্ত রক্তের অংশে পরম সুখে পালিত হইয়াছি। প্রজারা আমার প্রাণাপেক্ষা সুহোদর ভ্রাতা । পবিত্র জন্মভূমিতে, সেই পবিত্র বাস্তুতে, যে বিদেশীয়ের বাণিজ্যের ছলে প্রবেশ করিয়া অমানুষিক অত্যাচার করিতেছে, তাহাদিগেরই সহিত রন্ধুভাবে সন্ধি করিব ? আমার এ ছার জীবনে ধিক! এমন কলঙ্কিত জীবন আমি এক নিমিষের জন্যও চাহি না ।” এই কথা বলিতে বলিতে অভিমানে, ক্রোধে, ঘৃণায়, তাহার কণ্ঠরোধ হইয়া আসিল – নিস্তেজ, নীরক্ত চক্ষু হইতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞার প্রখর জ্যোতি নিৰ্গত হইতে লাগিল । সেই সঙ্গে প্রবল রোগ জর আসিল । তিনি শেষে আসন্ন শরীরে পুনরায় শয্যায় পতিত হইলেন । র্তাহার বাল্য সখা ঘোর অপ্রতিভ হইয়া ক্ষমা চাহিলেন, কিন্তু যোগেন্দ্রনারায়ণ আর কথা কহিতে পারিলেন না । তাহার সেই কাল জর আর ত্যাগ হইল না । ইহার দুই কি এক দিন পরেই তাহার আসন্নকাল উপস্থিত হইল । তিনি সকল আশা, সকল ভরসা, সকল দুঃখ, সকল সন্তাপ লইয়া যৌবনের প্রথম উদ্যমে অতৃপ্ত জীবনে, ১২৬৯ বঙ্গাব্দের ২৯শে বৈশাখ তারিখে একুশ বৎসর এগার মাস বয়সে ইহধাম ত্যাগ করিলেন । সে সময়ে বোয়ালিয়ায় কৰ্ম্মচারী ও সাধারণ ভৃত্য ব্যতীত তাহার মৃত্যুকালে আত্মীয় বলিতে আর কেহই ছিল না । তিনি আপনার আসন্নকাল জানিয়া পূৰ্ব্বেই এক খানি উইলের খসড়া প্রস্তুত করিয়া রাখিয়াছিলেন, জরের প্রবল প্রাদুর্ভাবের সময় তাহা ছাপা করাইলেন । সাক্ষিদিগের শাক্ষাতে তাহাতে স্বাক্ষর করিবার চেষ্টা করিলেন, কিন্তু