বলিয় তাহাকে আন্তরিক প্রতি ও শ্রদ্ধা করিতেন। আমরা অনেকবার দেখিয়াছি কেশববাবু উপাসনা করিতেছেন, তাহার কোনও একটা কথা শুনিয়া লাহিড়ী মহাশয় পাগলের মত হইয়া গিয়াছেন, স্থির হইয়া বসিতে পারিতেছেন না; “ও. কেশব কি বললেন, ও কেশব কি বললেন” বলিয়া অস্থিয় হইয়া বেড়াইতেছেন। বলিতে কি তাহায় নিজের ভক্তিভাব এতই অধিক ছিল, যে অতিরিক্ত মনের আবেগ হইত বলিয়া তিনি আমাদের উপাসনাতে অনেক স্ময় বসিতেই পারতেন না।
এই ত কেশব বাবুর প্রতি প্রতি ও শ্রদ্ধা, অথচ স্ত্রী-স্বাধীনতা পক্ষীয়দিগের হইয় তাহাকে উচিত কথা শুনাইতে ক্রটা করিতেন না। এই সকল কথা শুনিতে এক এক সময় এত রুক্ষ বোধ হইত যে অপরের অসহ্য হইয়া উঠিত। তিনি অন্তায়ের প্রতিবাদ করিতে কাহারও মুখাপেক্ষা করিতেন না। আশ্রমবাস-কালের একদিনের ঘটনা মনে আছে। একদিন রামতন্ত্র বাবু র্তাহার একজন পীড়িত বন্ধুকে দেখিতে গেলেন। দেখিয়া ফিরিয়া আসিলে, কাহাকে দেখিতে গিয়াছিলেন ও তিনি কেমন আছেন, জানিবার জন্ত আশ্রমবাসিনী মহিলাদিগের অনেকে আসিয়া তাহাকে ঘিরিয়া ফেলিলেন। তখন ঘটনাক্রমে আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। লাহিড়ী মহাশয় তাহার পীড়িত যৌবন-মুহৃদের নাম করিবামাত্র একজন মহিল৷ বলিয়া উঠিলেন— “ওমা ওমা, এমন মানুষকেও আপনি দেখতে যান? সে যে লক্ষ্মীছাড়া লোক ” শুনিয়া লাহিড়ী মহাশয় প্রাণে বড় ব্যথা পাইলেন। কেন যে-ঐ মহিলা শুরূপ বলিলেন তাহা তিনি জানিতেন। র্তাহার সেই যৌবন-মুহৃদটী যৌবনকালে একজন ডেপুটী মাজিষ্ট্রেট ছিলেন। সেই সময় তিনি যেখানেই স্লাইতেন সেইখানেই তাহার স্বলিত-চরিত্র লোক বলিয়া অথ্যাতি হইত। ঐ মহিলাটী সেরূপ কোনও কোনও স্থানে থাকিয়া ঐরূপ অখ্যাতি অনেক দিন শুনিয়া আসিয়াছেন। কিন্তু সে অনেক দিনের কথা। তাছার পর তাহার স্বভাব-চরিত্র শুধরাইয়া গিয়াছে; তিনি ধৰ্ম্মচিন্থাতে বিশেষভাবে মনোনিবেশ করিরাছেন; তখন তিনি রাজকাৰ্য হইতে অবস্থত ও মৃত্যুশয্যাতে শয়ান; এ সকল সংবাদ ঐ মহিলা জানিতুেন না। লাহিড়ী মহাশয় বলিলেন— “ঠাকুরুন। আপনি কেন তাকে লক্ষ্মীছাড়া লোক বললেন, তা আমি জানি। কিন্তু তার সে সব অনেক দিন ঘুচে গিয়েছে; সে এখন বড় ভাল লোক হয়েছে; কেবল ধৰ্ম্মের কথা নিয়েই আছে; বিশেষ সে মৃত্যুশয্যাতে পড়েছে,