পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
রূপসী বোম্বেটে

আইন, আমার আদেশের উপর কোনও আপীল নাই। যদি কেহ আমার আদেশ লঙ্ঘন করে—তাহা হইলে আমি তাহাকে অতি কঠোর শাস্তি, দিব।”

 আমেলিয়ার মাতুল গ্রেভিস্‌ ধীরে ধীরে উঠিয়া গেল; আমেলিয়া সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই স্থানে বসিয়া রহিলেন। স্যার পর তিনি জাহাজের একটি সুসজ্জিত কেবিনে প্রবেশ করিয়া বৈদ্যুতিক গোলকে অঙ্গুলী স্পর্শ করিলেন, সঙ্গে সঙ্গে সেই কক্ষটি উজ্জ্বল বিদ্যুতালোকে উদ্ভাসিত হইল।

 এই সেলুনের সুবিস্তীর্ণ মেঝে কারুকার্যখচিত স্থূল গালিচায় আবৃত; সেলুনের কাষ্ঠ নির্ম্মিত প্রাচীর গাত্রে শ্রেণীবদ্ধ আলমারি, প্রত্যক্ষ আলমারি নানা প্রকার গ্রন্থে পূর্ণ। অন্য দিকে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রাগার; তাহাতে লৌহ, পিত্তল ও কাচ নির্ম্মিত নানা প্রকার যন্ত্র সন্নিবিষ্ট ছিল; এতদ্ভিন্ন নানা আকারের শিশি ও বোতলে নানা প্রকার ঔষধ। মস্তকের উপর অসংখ্য তারের জাল, কোনও তার অঙ্গুলীর ন্যায় স্থূল, কোনও তার কেশের ন্যায় সূক্ষ্ম। এই কক্ষের সাজসজ্জা দেখিলে বুঝিতে পারা যাইত, আমেলিয়া বোম্বেটে-গিরিতেই এত কাল অতিবাহিত করেন নাই।

 আমেলিয়া তাঁহার-সেলুনের দ্বার রুদ্ধ করিয়া চেয়ারে উপবেশন, করিলেন, তাহার পর দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়ো বলিলেন, “গত ছয় বৎসর কাল অক্লান্ত চেষ্টার পর আমি প্রতিহিংসা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হইয়াছি।—সর্ব্বাগ্রে পিয়ারসনের সর্বনাশ করিব, তাহার পর মর্টন। ছয় জনের একজনকেও ছাড়িব না।—আমার এই বৈরনির্যাতন কার্য্যে হে স্বর্গের দেবতা, তুমি যদি সহায় না হও, তবে শয়তান, তুমি আমার সহায় হও।”