পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
শকুন্তলা।

তাঁহার প্রত্যাগমন পর্য্যন্ত এই স্থানে থাকিয়া, তপোবনের উপদ্রব নিবারণ করিতে হইবেক। রাজা কহিলেন, তপস্বীদিগের এই আদেশে অনুগৃহীত হইলাম। মাধব্য কহিলেন, বয়স্য! মন্দ কি, এ তোমার অনুকূল গলহস্ত। রাজা শুনিয়া ঈষৎ হাস্য করিলেন; অনন্তর, দৌবারিককে আহ্বান করিয়া, সারথিকে রথ প্রস্তুত করিতে আদেশ দিয়া, ঋষিকুমারদিগকে কহিলেন, আপনারা প্রস্থান করুন; আমি যথাকালে তপোবনে উপস্থিত হইতেছি। ঋষিকুমারেরা অতিশয় আহ্লাদিত হইয়া কহিলেন, মহারাজ! না হইবেক কেন? আপনি যে বংশে জন্মগ্রহণ করিয়াছেন, আপনার এই ব্যবহার তাহার উপযুক্তই বটে। বিপদ‍্গ্রস্তকে অভয়দান পুরুবংশীয়দিগের কুলব্রত।

 এই বলিয়া আশীর্বাদ করিয়া ঋষিকুমারের প্রস্থান করিলে পর, রাজা মধিব্যকে জিজ্ঞাসা করিলেন, বয়স্য! যদি তোমার শকুন্তলাদর্শনে কৌতূহল থাকে, আমার সমভিব্যাহারে চল। মাধব্য কহিলেন, তোমার মুখে তাহার বর্ণনা শুনিয়া দেখিতে অত্যন্ত অভিলাষ হইয়াছিল; কিন্তু এক্ষণে নিশাচরের নাম শুনিয়া সে অভিলাষ এক বারে গিয়াছে। রাজা শুনিয়া ঈষৎ হাস্য করিয়া কহিলেন; ভয় কি, আমার নিকটে থাকিবে। মাধব্য কহিলেন, তবে আর নিশাচরে আমার কি করিবেক? এইরূপ কথোপকথন হইতেছে, এমন সময়ে দ্বারপাল আসিয়া