পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
শকুন্তলা।

অসুস্থতার সংবাদশুনিয়া, আমি কেমন আছি জানিতে আসিতেছেন; এই নিমিত্তই, অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা চক্রবাকচক্রবাকীচ্ছলে আমাদিগকে সাবধান করিতেছে; তুমি সত্বর লতামণ্ডপ হইতে নির্গত ও অন্তর্হিত হও। রাজা, ভাল আমি চলিলাম, যেন পুনরায় দেখা হয়, এই বলিয়া, লতবিতানে ব্যবহিত হইয়া, শকুন্তলাকে নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন।

 কিয়ৎ ক্ষণ পরে, শান্তিজলপূর্ণ কমণ্ডলু হস্তে লইয়া, গৌতমী লতামণ্ডপে প্রবেশ করিলেন, এবং শকুন্তলার শরীরে হস্ত প্রদান করিয়া কহিলেন, বাছা! শুনিলাম, আজি তোমার বড় অসুখ হয়েছিল, এখন কেমন আছ, কিছু উপশম হয়েছে? শকুন্তলা কহিলেন, হা ঁপিসি! আজি বড় অসুখ হয়েছিল; এখন অনেক ভাল আছি। তখন গৌতমী, কমণ্ডলু হইতে শান্তিজল লইয়া, শকুন্তলার সর্ব্ব শরীরে সেচন করিয়া কহিলেন, বাছা! সুস্থ শরীরে চিরজীবিনী হয়ে থাক। অনন্তর, লতামণ্ডপে অনসূয়া অথবা প্রিয়ংবদা কাহাকেও সন্নিহিত না দেখিয়া, কহিলেন, এই অসুখ, তুমি একলা আছি বাছা, কেউ কাছে নাই। শকুন্তলা। কহিলেন, না পিসি! আমি একলা ছিলাম না, অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা বরাবর আমার নিকটে ছিল; এই মাত্র মালিনীতে জল আনিতে গেল। তখন গৌতমী কহিলেন, বাছা! আর রোদ নাই, অপরাহ্ণ হয়েছে, এস কুটীরে যাই। শকুন্তলা