পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
শকুন্তলা।

শিশুকে মুক্ত করিয়া দিলেন, এবং স্পর্শসুখ অনুভব করিয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন, পরের পুত্রের গাত্র স্পর্শ করিয়া আমার এরূপ সুখানুভব হইতেছে, যাহার পুত্র, সে ব্যক্তি ইহার গাত্র স্পর্শ করিয়া কি অনুপম সুখ অনুভব করে, তাহা বলা যায় না।

 বালক অত্যন্ত দুরন্ত হইয়াও রাজার নিকট অত্যন্ত শান্তস্বভাব হইল, ইহা দেখিয়া এবং উভয়ের আকারগত সৌসাদৃশ্য দর্শন করিয়া, তাপসী বিস্ময়াপন্ন হইলেন। রাজা, সেই বালককে ক্ষত্রিয়সন্তান নিশ্চয় করিয়া, তাপসীকে জিজ্ঞাসিলেন, এই বালক যদি ঋষিকুমার না হয়, কোন ক্ষত্রিয়বংশে জন্মিয়াছে, জানিতে ইচ্ছা করি। তাপসী কহিলেন, মহাশয়! এ পুরুবংশীয়। রাজা শুনিয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন, আমি যে বংশে। জন্মিয়াছি, ইহারও সেই বংশে জন্ম। পুরুবংশীয়দিগের এই রীতি বটে, তাঁহারা, প্রথমতঃ অশেষ সাংসারিক সুখভোগে কালযাপন করিয়া, পরিশেষে সস্ত্রীক হইয়া অরণ্যবাস আশ্রয় করেন।

 পরে রাজা তাপসীকে জিজ্ঞাসিলেন, এ দেবভূমি, মানুষের অবস্থিতির স্থান নহে; অতএব এ বালক কি সংযোগে এখানে আসিল? তাপসী কহিলেন, ইহার জননী অপ্সরাসম্বন্ধে এখানে আসিয়া এই সন্তান প্রসব করিয়াছেন। রাজা শুনিয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন, পুরুবংশ ও অপ্সরাসম্বন্ধ এই দুই কথা শুনিয়া, আমার হৃদয়ে পুনর্বার আশার সঞ্চার