পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/২৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ বলিয়া, বিমলা কৃত্রিম ক্রোধের আড়ালে হাসি চাপিয়া দ্রুতপদে প্রস্থান করিল। নরেন্দ্র স্বদীর্ঘ নিশ্বাস ফেলিয়া মোট তাকিয়াটা হেলান দিয়া বসিল। গগনবাৰু বলিলেন, এ-বেলায় কেমন আছ হে ? ভাল হয়ে গেছি। এবার বিদায় দাও ভাই । বিদায় দাও ? ব্যস্ত হয়ে না হে—দু’দিন থাকে । তোমার এই বোনটির আশ্রয়ে যে ক’টা দিন বাস করতে পায়, তার তত বৎসর পরমায়ু বৃদ্ধি হয়, সে খবর জানো ? জানিনে বটে, কিন্তু সম্পূর্ণ বিশ্বাস করি । গগনবাবু দুই চক্ষু বিস্ফারিত করিয়া বলিলেন, বিশ্বাস করি কি হে, এ যে প্রমাণ করা কথা ! বাস্তবিক নরেনবাবু, এমন বতুও সংসারে পাওয়া যায় ! ভাগ্য ! ভাগাং ফলতি—কি হে কথাটা ? নইলে আমার মত হতভাগ্য যে এ বস্তু পায়, এ ত স্বপ্নের অগোচর ! বৌঠাকরুণ—না হে না, থেকে যাও দুদিন—এমন সংসার ছেড়ে স্বর্গে গিয়েও আরাম পাবে না, তা বলে দিচ্চি ভাই । বিমলা বহু দূরে যায় নাই, ঠিক পর্দার আড়ালেই কান পাতিয়াছিল—চোখ মুছিয়। উকি মারিয়া সেই প্রায়ান্ধকারেও স্পষ্ট দেখিতে পাইল তাহার স্বামীর কথাগুলো শুনিয়া নরেন্দ্রের মুখখান একবার জলিয়া উঠিয়াই যেন ছাই হইয়া গেল। 8 দিন-পনের পরে দুপুরের গাড়িতে ইন্দু মেয়ে লইয়া মেদিনীপুর হইতে ফিরিয়া আসিল । স্ত্রী ও কন্যাকে স্বস্থ সবল দেখিয়া নরেন্দ্রর শীর্ণ-পাণ্ডুর মুখ মুহূর্তে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল। সাগ্রহে ঘুমন্ত কন্যাকে বুকে টানিয়া লইয়া প্রশ্ন করিল, কেমন আছ ইন্দু ? বেশ আছি। কেন ? তোমার জরের মতন হয়েছিল শুনে তারি ভাবনা হয়েছিল। সেরে গেছে ? না হলে ডাক্তার ডাকবে না-কি ? লরেন্দ্রর হাসি-মুখ মলিন হইল। কহিল, না, তাই জিজ্ঞাসা করচি। কি হবে করে ? এদিকে ত পঞ্চাশটি টাকা পাঠিয়ে চিঠির ওপর চিঠি যাচ্ছিল— কেমন আছ—কেমন আছ—সাবধানে থেকে—সাবধানে থেকে । আমি কি কচি খুকি, না, পঞ্চাশটি টাকা দাদা আমাকে দিতে পারতেন না? ও টাকা পাঠিয়ে ఫిల్మ్స్