পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেহ বিক্রয়
৮৭

বাজবালার এক জ্যেষ্ঠা ভ্রাতৃবধূ এই ব্যাপারে তাহাকে গোপনে সাহায্য করিত। যুবকটী স্বদেশী আন্দোলনের সময় খুব “বন্দে মাতরম্” করিয়া বেড়াইত। তিন বৎসর ধরিয়া এই গুপ্ত প্রেমলীলা চলিতে থাকে। অবশেষে রাজবালার সন্তান-সম্ভাবনা হওয়ায় প্রেমিক যুবক পলায়ন করে। রাজবালা ঝিয়ের সহিত গঙ্গাস্নানের অছিলায় বাড়ীর বাহির হইয়া আসে। আর সে ফিরিয়া যায় নাই। তারপর নানা দুঃখ দুর্দ্দশার আবর্ত্তে ঘুরপাক খাইতে খাইতে এই উদ্ধার আশ্রমে উপস্থিত হইয়াছে।

 কালীদাসী সধবা, কামারের মেয়ে। সে রূপসী ছিল। বর্দ্ধমান জেলার কোন পল্লীগ্রামে তাহার শ্বশুর ঘর। স্বামীর নিকট হইতে দুর্ব্বৃত্তেরা তাহাকে বলপূর্বক অপহরণ করে। তাহারা এক বৎসর ধরিয়া তাহাকে নানাস্থানে ঘুরাইয়া বেড়ায়। ইহা লইয়া মামলা মোকদ্দমা হইয়াছিল। কিন্তু মোকদ্দমার পরে কালাদাসীর স্বামী তাহাকে গ্রহণ করিল না। তাহার এক আত্মীয়ের পরামর্শে সে পতিতাবৃত্তি অবলম্বন করিতে যাইতেছিল। বর্দ্ধমান সহরের কোন উকীল জানিতে পারিয়া তাহাকে এইখানে পাঠাইয়া দেন।

 ক্রমশঃ বুঝিতে পারিলাম, উদ্ধার আশ্রমটী আমাদের পক্ষে নিরাপদ স্থান নহে। অন্নবন্ত্রের কোন ক্লেশ নাই। আমাদের মধ্যে যাহারা রূপযৌবন সম্পন্না, তাহাদের প্রতি কর্ত্তৃপক্ষের মধ্যে কাহারও কাহারও একটু বিশেষ দৃষ্টি। আমার উপর তাঁহাদের শীঘ্রই অনুগ্রহ পড়িল। আমাকে কাজ কর্ম্ম করিতে হইত না। আমার থাকিবার ঘর বিবিধ আসবাব পত্রে সজ্জিত হইল। আমি অতিশয় প্রীত হইলাম। আমার ভাল কাপড় চোপড়, দামী জামা