পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R: শ্ৰীকান্তু বিখ্যাত নন্দ মিস্ত্রী বলিয়া পরিচয় দিল। পাশে একটি বিগত-যৌবন স্কুলাঙ্গী বসিয়া একদৃষ্টি চাহিয়া আমাকে দেখিতেছিল। আমি তাহার মুখের দিকে চাহিয়া স্তম্ভিত হইয়া গেলাম। মানুষের এত বড় দুটো ভঁাটার মত চোখ ও এত মোটা জোড়া ভুরু আমি পূর্বে কখনও দেখি নাই। নন্দ মিন্ত্রী তাহার পরিচয় দিয়া কহিল, বাবু মহাশয়, ইটি আমার পরিা কথাটা শেষ না হইতেই স্ত্রীলোকটি ফোস করিয়া গৰ্জাইয়া উঠিল-- পরিবার । আমার সাত পাকের সোয়ামী বলচেন, পরিবার । খবরদার বলচি মিস্তিরী, যার তার কাছে মিছে কথা ব’লে আমার বদনাম ক’রে না ব’লে দিচ্চি । আমি ত বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হইয়া গেলাম। নন্দ মিন্ত্রী অপ্ৰতিভ হইয়া বলিতে লাগিল, আহা ! বাগ করিস কেন টগর ? পরিবার বলে আর কাকে ? বিশ বচ্ছার টগর ভয়ানক ক্রুদ্ধ হইয়া বলিতে লাগিল, হলোই বা বিশ বচ্ছর। পোড়া কপাল। জাত-বোষ্টমের মেয়ে আমি, আমি হলুম কৈবত্তের পরিবার। কেন, কিসের দুঃখে ? বিশ বচ্ছর ঘর করাচি বটে, কিন্তু একদিনের তরে হেঁসেলে ঢুকতে দিয়েচি ? সে কথা কারও বলবার জো নেই। টগর বোষ্টমী ম’বে যাবে, তবু জাতি-জন্ম খোয়াবে না।--তা জানো ? বলিয়া এই জাত-বোষ্টমের মেয়ে জাতের গর্বে আমার মুখের পানে চাহিয়া তাহার ভাটার মত চােখ দুটাে ঘূর্ণিত করিতে व्लांछित । নন্দ মিস্ত্রী লজ্জিত হইয়া বারংবার বলিতে লাগিল, দেখলেন মশায়, দেখলেন ? এখনো এদের জাতের দেমাক! দেখলেন । আমি তাই সন্থ করি, আর কেউ হ’লে-কথাটা সে তাহার বিশ বচ্ছরের পরিবারের চোখের পানে চাহিয়া আর সম্পূর্ণ করিতে পারিল না। আমি কোন কথা না কহিয়া একটা গেলাস চাহিয়া লইয়া প্ৰস্থান করিলাম। উপয়ে আসিয়া এই জাত-বোষ্টমীর কথাগুলো মনে করিয়া হাসি চাপিতে পারিলাম না। কিন্তু পরীক্ষণেই মনে পড়িল, এ ত