পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

F& শ্ৰীকান্ত কথাটা অকস্মাৎ যেন নূতন করিয়া বাজিল। ইহার মধ্যে হেঁয়ালি যেটুকু ছিল, তাহ ধীরে ধীরে সুস্পষ্ট হইয়া মনে হইতে লাগিল, বাস্তবিকই অনেকখানি সত্য ইহাতে লুকাইয়া আছে, যাহা আজ পর্যন্ত আমােব দৃষ্টিগোচর হয় নাই। রাজলক্ষ্মী কহিল, তুমি সেই ভদ্রলোকটির সম্বন্ধে তামাশা করেছিলে । কিন্তু তার কথা শুনে আমার কতখানি চোখ খুলে গেছে, সে তি सन् माँ ! জানি না, তাহা স্বীকার করিতেই সে কহিতে লাগিল, জানো না তার কারণ আছে। কোন জিনিস জানিবার জন্যে যতক্ষণ না মানুষের বুকেব ভেতর থেকে একটা ব্যাকুলত ওঠে, ততক্ষণ সবই তার চোখে ঝাপসা হয়ে থাকে। এতদিন তোমার মুখে শুনে ভাবতুম, সত্যিই যদি আমাদের দেশের লোকের দুঃখ এত বেশি, সত্যিই যদি আমাদের সমাজ এমন ভয়ানক অন্ধ, তবে তার মধ্যে মানুষ বেঁচে থাকেই বা কি ক’রে, তাকে মেনে চলেই বা কি ক’রে । আমি চুপ করিয়া শুনিতেছি দেখিয়া সে আস্তে আস্তে বলিল, আব তুমি বা এত বুঝবে কি ক’বে ? কখনো এদের মধ্যে থাকোনি, কখনো এদের সুখদুঃখ ভোগ করোনি ; তাই বাইরে থেকে বাইরের সমাজের সঙ্গে • তুলনা ক’রে ভাবতে, এদের বুঝি কষ্টের আর অবধি নেই। যে বড়লোক জমিদার পোলাও খেয়ে থাকে, সে তার কোন দরিদ্র প্রজাকে পান্ত ভাত খেতে দেখে যদি ভাবে, এর দুঃখের আর সীমা নেই।--তার যেমন ভুল হয়, তোমারও তেমনি ভুল হয়েছে। বলিলাম, তোমার তর্কটা যদিচ ন্যায়শাস্ত্রের আইনে হচ্ছে না, তবুও জিজ্ঞাসা করি কি ক’রে জানলে দেশের সম্বন্ধে আমার এর চেয়ে বেশি। জ্ঞান নেই ? রাজলক্ষ্মী কহিল, কি ক’রে থাকবে ? তোমার মত স্বার্থপর লোক আর সংসারে আছে নাকি ? যে কেবল নিজের আরামের জন্যে পালিয়ে বেড়ায়, সে ঘরের খবর জানবে কোথা থেকে ! তোমাদের মত লোকই সমাজের বেশি নিন্দে ক’রে বেড়ায় যারা সমাজের কোন ধারই ধারে না । ه دس( rig ( Iiی