পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s @事博 গৈল শুভক্ষণের প্রতীক্ষায়। তার পরে একদিন সকালে অপরিচিত গঙ্গামাটির উদ্দেশে আমরা সত্যসত্যই যাত্ৰা করিয়া বাহির হইয়া পড়িলাম। পথটা আমার ভাল কাটল না-মনে কিছুমাত্র সুখ ছিল না । আর সকলের চেয়ে খারাপ কাটিল বোধ করি রতনের। সে মুখখানা অসম্ভব ভারী করিয়া গাড় র এক কোণে চুপ-চাপ বসিয়া রহিল ; ষ্টেশনের পর ষ্ট্রেশন গেল, কোন কাজে কিছুমাত্র সাহায্য করিল না ; কিন্তু আমি ভাবিতেছিলাম সম্পূর্ণ অন্য কথা । স্থানটা জানা কি অজানা, ভাল কি মন্দ, স্বাস্থ্যকব কিংবা ম্যালেরিয়ায় ভরা সেদিকে আমার খেয়ালই ছিল না ; আমি ভাবিতেছিলাম, যদিীচ জীবনটা এতদিন আমার নিরুপদ্রবে। কাটে নাই, ইহাৰ মধ্যে অনেক ভুল-চুক, অনেক দুঃখ-দৈন্যই গিয়াছে, তবুও সে-সব আমার অত্যন্ত পরিচিত। এই দীর্ঘদিনে তাহাদের সহিত মোকাবিলা ত বটেই, বরঞ্চ এক প্ৰকাবের স্নেহই জন্মিয়া গিয়াছে। তাহদের জন্য আমিও কাহাকে দোষ দিই না, আমাকেও আবে বড় কেহ দোষ দিয়া সময় নষ্ট করে না, কিন্তু এই নিশ্চয়তাই আমাকে বিকল করিয়াছে। আজ নয় কাল বলিয়া আর দেরী করিবার রাস্তা নাই। অথচ ইহার না জানি ভাল, না জানি মন্দ । তাই ইহার ভাল-মন্দ কোনটাই আজ আব্ব কোন মতেই ভাল লাগে না । গাড়ী যতই দ্রুতবেগে গপ্তব্য স্থানের নিকটবৰ্ত্তী হইতে চলিয়াছে, ততই এই অজ্ঞাত রহস্যের বোঝা আমার বুকের উপর চাপিয়া চাপিয়া বসিতেছে। কত কি যে মনে হইতে লাগিল, তাহার অবধি নাই। মনে হইল, অচির ভবিষ্যতে হয়ত আমাকেই কেন্দ্ৰ, করিয়া একটা বিশ্ৰী দল গড়িয়া উঠিবে, তাহদের না পারিব লইতে, না। পারিব ফেলিতে। তখন যে কি হইবে, আর কি যে হইবে না, ভাবিতেও সমস্ত মনটা যেন হিম হইয়া উঠিল । চাহিয়া দেখিলাম, রাজলক্ষ্মী জানালার বাহিরে দুচক্ষু মেলিয়া নীরবে বসিয়া আছে। সহসা মনে হইল ইহাকে আমি ৬ কোন দিন ভালবাসি নাই। তবুইহাকেই আমার ভালবাসিতেই হইবে ; সকল থাও কােন দিকে বাহির হইবার পথ নাই। পৃথিবীতে এতবড় বিড়ম্বন৷ নির্ভর করির কাহারও ভাগ্যে ঘটিয়াছে। অথচ, একটা দিন পূর্বেও ওই নূতন চাকরিটান হইতে আত্মরক্ষা করিতে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে উহারই হস্তে বসিয়া রছিলাম, । তখন মনে মনে সবলে বলিয়াছিলাম, তোমার