পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

St. €कासु অকস্মাৎ এ কি ঘোরতর মাখামাখি! তাহার কলেরায় চিকিৎসার ভার, শুশ্ৰষার ভার, মায় তার শ-দেড়েক মাটি-কাটা কুলির খবরদারির ভার গিয়া পড়িল আমার উপর ! বাকি রহিল শুধু তাহার সোলার হাট এবং টাটু ঘোডাটি। আর বোধ হয় যেন ওই কুলি মেয়েটিও। তাহার মানভূমের অনিৰ্ব্বচনীয় বাউরী ভাষার অধিকাংশই ঠেকিতে লাগিল, কেবল এটুকু ঠেকিল না যে মিনিট দশ-পনেরোর মধ্যেই সে আমাকে পাইয়া অনেকখানি আশ্বস্ত হইয়াছে। যাই, আর ক্রটি রাখি কেন, ঘোড়াটিকে একবার দেখিয়া আসি গে । ভাবিলাম আমার অদৃষ্টই এমনি । না হইলে রাজলক্ষ্মী বা আসিত কিৰূপে, অভয়াই বা আমাকে দিয়া তাহার দুঃখের বোঝা বহাইত কেমন কবিয়া ? আর এই বাঙ এবং তাহার কুলি-গ্যাঙ ! কোন ব্যক্তির পক্ষেই ত এসকল ঝড়িয়া ফেলিতে একমুহূৰ্ত্তের অধিক সময় লাগিত না । আর আমিই বা সারাজীবন বহিয়া বেড়াই কিসের জন্য ? তঁাবটা রেল কোম্পানীর । সতীশের নিজস্ব সম্পত্তির একটা তালিকা মনে মনে প্ৰস্তুত করিয়া লইলাম। কয়েকটা এনামেলের বাসন, একটা ষ্টেভ, একটা লোহার তোরঙ্গ, একটা কেরোসিন তেলের বাক্স, এবং তাহার শযন করিবার ক্যাম্বিসের খাট, বহু ব্যবহারে ডোঙার আকার ধারণ করিয়াছে । সতীশ চালাক লোক, এ খাটে বিছানার প্রয়োজন হয় না, একখানা যা-তা হইলেই চলিয়া যায়, তাই ডোরাকাটা একখানা সতরঞ্চি ছাড়া আব্ব কিছুই সে কেনে নাই । ভবিষ্যতে কলেরা হওয়ার কোন ব্যবস্থাই তাহাব ছিল না । ক্যাম্বিসের খাটে শুশ্রীষা করার অত্যন্ত অসুবিধা, এবং একমাত্র সতরঞ্চি অতিশয় নোঙরা হইয়া উঠিয়াছে। অতএব তাহাকে নীচে শোয়ানো ছাড়া উপায় নাই । আমি যৎপরোনাস্তি চিন্তিত হইয়া উঠিলাম। মেয়েটির নাম কালীদাসী, জিজ্ঞাসা করিলাম, কালী, কারও দু-একখানা বিছানা পাওয়া যাবে ? कांौ ब्,ि न । কহিলাম, দুটি খড়-টড় যোগাড় ক’রে আনতে পারি?