পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত S পরে সে নিশ্বাস ফেলিয়া সোজা হইয়া বসিল । যেন দীর্ঘশ্বাসের বাতাস দিয়া সে তাহার চারিদিকে ঘনায়মান বাস্পাচ্ছিন্ন মোহের আবরণটাকে ছিড়িয়া ফেলিতে চাহিল। ঘরের মন্দ আলোকে তাহার মুখের চেহারা ভাল দেখিতে পাইলাম না, কিন্তু যখন সে কথা কহিল, তাহার কণ্ঠস্বরের আশ্চৰ্য্য পরিবর্তন লক্ষ্য করিলাম রাজলক্ষ্মী বলিল, বৰ্ম্ম থেকে তোমার চিঠির জবাব এসেছে। অফিসের বড় খাম, হয়ত জরুরি কিছু আছে ভেবে আনন্দকে দিয়ে পড়িয়ে নিলাম । তার পরে ? বড়সাহেব তোমার দরখাস্ত মঞ্জুর করেছেন। জানিয়েছেন, তুমি গেলেই তোমার সাবেক চাকরি আবার ফিরে পাবে বটে ! ভঁ। আনবো চিঠিখান ? না, থাক। কাল সকালে দেখবো । আবার দুজনেই চুপ করিয়া রহিলাম। কি যে বলিব, কেমন করিয়া যে এই নীরবতা ভাঙ্গিব ভাবিয়া না পাইয়া মনের ভিতরটায় কেবল তোলপাড় করিতে লাগিল । হঠাৎ এক ফোটা চোখের জল টপ করিয়া আমার কপালের উপরে আসিয়া পড়িল । আস্তে আস্তে জিজ্ঞাসা করিলাম, আমার দরখাস্ত মঞ্জুর হয়েছে এ ত খারাপ সংবাদ নয় ; কিন্তু তুমি কঁদলে কেন ? রাজলক্ষ্মী আঁচলে নিজের চোখ মুছিয়া বলিল, তুমি বিদেশে চাকরি নিয়ে আবার চলে যাবার চেষ্টা করছি, আমাকে এ-কথা জানাওনি কেন ? তুমি কি ভেবেছিলে আমি বাধা দেবো । কহিলাম, না। বরঞ্চ জানালে তুমি উৎসােহই দিতে। কিন্তু, সেজন্য বনয়-বোধহয় ভেবেছিলাম। এসব তুচ্ছ ব্যাপার শোনবার তোমার সময় হবে না । রাজলক্ষ্মী নিকবাক হইয়া রহিল ; কিন্তু তাহার উচ্ছসিত নিশ্বাস চাপিবার প্রাণপণ চেষ্টাও আমার কাছে গোপন রহিল না ; কিন্তু ক্ষণকাল মাত্র। ক্ষণেক পরেই সে মুম্বুকণ্ঠে কহিল, এ কথার জবাব দিয়ে আর