পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ap শ্ৰীকান্ত চলো। আর পথের ধারে রেলের পথ ত রইলাই-ভালো না লাগে। ফিরে এস, আমি বারণ করব না । একজন বৈষ্ণবী আসিয়া খবর দিল—ঠাকুরের প্রসাদ ঘরে দিয়ে अiन ईश्gछ । কমললতা বলিল, চলো তোমার ঘরে গিয়ে বসিগে । আমার ঘর ? তাই ভালো । আর একবার তাহার মুখের পানে চাহিয়া দেখিলাম। এবার আর সন্দেহের লেশমাত্র রহিল না যে সে পরিহাস করিতেছে না । আমি যে মাত্ৰ উপলক্ষ তাহাও নিশ্চিত, কিন্তু যে কারণেই হোক এখানের বঁধিন ছিড়িয়া এই মানুষটি পলাইতে পারিলে যেন বঁাচে —তাহার একমুহূৰ্ত্তও বিলম্ব সহিতেছে না। ঘরে আসিয়া খাইতে বসিলাম। অতি পরিপাটি প্ৰসাদপলায়নের ষড়যন্ত্রটা জমিত ভালো, কিন্তু কে একজন অত্যন্ত জরুরি কাজে কমললতাকে ডাকিয়া লইয়া গেল। সুতরাং একাকী মুখ বুজিয়াই সেবা সমাপ্ত কবিতে হইল। বাহিরে আসিয়া কাহাকেও বড় দেখিতে পাইলাম না, দাবাজী দ্বারিকান্দাসই বা গেলেন কোথায় ? দুই-চারিজন প্রাচীন বৈষ্ণবী ঘোরাঘুরি করিতেছে-কাল সন্ধ্যায় ঠাকুরঘরে ধোঁয়ার ঘোরে। ইহাদেরই বোধ হয় অন্সর মনে হইয়াছিল, কিন্তু আজ দিনের বেলায় কড়া আলোতে কল্যকার সেই অধ্যাত্ম সৌন্দৰ্য্যবোধটা তেমন অটুট রইল না, গা-টা কেমনতর করিয়া উঠিল, সোজা আশ্রমের বাহিরে চলিয়া আসিলাম। শৈবালাচ্ছন্ন শীর্ণকায়া মন্দস্রোতা সুপরিচিত স্রোতস্বতী এবং সেই লতাগুল্মকণ্টকাকীর্ণ তাঁটভূমি, এবং সেই সৰ্পসন্ধুল সুদৃঢ় বেতসকুঞ্জ ও সুবিস্তৃত বেণুবন। দীর্ঘকালের অনভ্যাসবশতঃ গা ছমছম করিতে লাগিল, অন্যত্র যাইবার উপক্ৰম করিতেছি, কোথাও একটি লোক আড়ালে বসিয়াছিল, উঠিয়া কাছে আসিয়া দাড়াইল। প্রথমটা আশ্চৰ্য্য হইলাম। এ জায়গাতেও মানুষ থাকে! লোকটির বয়স হয়ত আমাদের মতো