পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-yave শ্ৰীকান্ত আমি দেখবো না, চোখ বুজৈ থাকবো । পারবে না। আমার কাজের ভার একদিন ফেলে যাবো। আমি তোমার ওপর। সব ভুলবে, কিন্তু সে ভুলতে কখনো পারবে না। এই বলিয়া সে একটুখানি মৌন থাকিয়া অকস্মাৎ নিজের পূর্ব কথার অনুসরণে বলিয়া উঠিল, হবেই ত এমনি অত্যাচার। যে দেশে সেয়ের বিয়ে না হ’লে ধৰ্ম্ম যায়, জাত যায়, লজ্জায় সমাজে মুখ দেখাতে পারে না-হাবা-বোবা-অন্ধ-আতুর কারও রেহাই নেইসেখানে একটাকে ফাকি দিয়ে লোকে অন্যটাকেই রাখে, এ ছাড়া সে দেশে মানুষের আর কি উপায় আছে বলে তা ? সেদিন সবাই মিলে আমাদের বোন দুটিকে যদি বলি না দিত, দিদি হয়তো মরতো না, আর আমি-এ জন্মে। এমন ক’রে তোমাকে হয়ত পেতুম না, কিন্তু মনের মধ্যে তুমিই চিরদিন এমনি প্ৰভু হয়েই থাকতে। আর, তাই বা কেন ? আমাকে এড়াতে তুমি পারতে না, যেখানে হোক, যতদিন হোক নিজে এসে আমাকে নিয়ে যেতে হতোই। একটা জবাব দিব ভাবিতেছি, হঠাৎ নীচ হইতে বালক-কণ্ঠে ডাক আসিল, মাসিমা ? আশ্চৰ্য্য হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, এ কে ? ও-বাড়ীর মেজবৌয়ের ছেলে, এই বলিয়া সে ইঙ্গিতে পাশের বাড়ীটা দেখাইয়া সাড়া দিল-ক্ষিতীশ, ওপরে এসে বাবা। পরীক্ষণেই একটি ষোল-সতের বছরের সুশ্ৰী বলিষ্ঠ কিশোর ঘরে আসিয়া প্ৰবেশ করিল। আমাকে দেখিয়া প্রথমটা সঙ্কুচিত হইল, পরে নমস্কার করিয়া তাহার মাসিমাকেই কহিল, আপনার নামে কিন্তু বারো টাকা চাদ পড়েচে মাসিমা । তা পড়ুক বাবা, কিন্তু সাবধানে সাঁতার কোেটা, কোনাে দুৰ্ঘটনা -म थे । না-কোন ভয় নেই মাসিমা ।