পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R P छैकारहु' আনন্দ বিস্ময়ের কণ্ঠে প্রশ্ন করিল, ঠাকুরদের নাম মানে কি গান নাকি দিদি ? রাজলক্ষ্মী মাথা নাড়িয়া সায় দিল । --দিদির কি এ বিদ্যেও আছে নাকি ? সামান্য একটুখানি। তারপরে আমাকে দেখাইয়া কহিল,- ছেলেবেলায় ওঁর কাছেই হাতেখড়ি। আনন্দ খুশী হইয়া বলিল, দাদাটি দেখচি বৰ্ণচোরা আম, বাইরে থেকে ধরবার জো নেই । তাহার মন্তব্য শুনিয়া বাজলক্ষ্মী হাসিতে লাগিল, কিন্তু আমি সবল মনে তাহাতে যোগ দিতে পারিলাম না । কারণ, আনন্দ বুঝিবে না কিছুই, আমার আপত্তিকে ওস্তাদেব বিনয়-বাক্য কল্পনা করিয়া ক্ৰমাগত পীড়াপীড়ি করিতে থাকিবে, এবং হয়ত বা শেষে রাগ করিয়া বসিবে। পুত্ৰশোকাতুর ধৃতরাষ্ট্র-বিলাপের দুৰ্যোধনের গানটা জানি, কিন্তু রাজলক্ষ্মীর পরে এ আসরে সেটা মানানসই হইবে না । হারমোনিয়াম আসিলে প্ৰথমে সচরাচর প্রচলিত দুই-একটা "ঠাকুরদের’ গান গাহিয়া রাজলক্ষ্মী বৈষ্ণব-পদাবলী আরম্ভ করিল, শুনিয়া মনে হইল সেদিন মুরারিপুর আখড়াতেও বোধ করি এমনটি শুনি নাই। আনন্দ বিস্ময়ে অভিভূত হইয়া গেল, আমাকে দেখাইয়া মুগ্ধচিত্তে কহিল, এ কি সমস্তই ওঁর কাছে শেখা দিদি ? সমস্তই কি কেউ একজনের কাছে শেখে আনন্দ ? সে ঠিক। তারপরে সে আমার প্রতি চাহিয়া কহিল, দাদা, এবার কিন্তু আপনাকে অনুগ্রহ করতে হবে। দিদি একটু ক্লান্ত । না হে, আমার শরীর ভালো নেই। শরীরের জন্য আমি দায়ী, অতিথির অনুরোধ রাখবেন না ? রাখবার জো নেই হে, শরীর বড়ো খারাপ। রাজলক্ষ্মী গম্ভীর হইবার চেষ্টা করিতেছিল। কিন্তু সামলাইতে