পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ অধ্যায় ] মোসলমান আক্রমণ । १e যাহোক, রাজা একদা কৃষ্ণগুণ শ্রবণ করিতেছিলেন, তখন কোষাধ্যক্ষ চন্দন চামরের অভাব জ্ঞাপন করিলে, রাজা তদেশীয় হীরানন্দ সাধুকে চন্দন চামর যোগাইতে আদেশ করিলেন। সাধু আদেশানুযায়ী “সোণামুখী ফেরুয়াল” ( সোণামুখী নামে নৌকা ) সাজাইয়া চন্দন চামরের জন্য যাত্রা করিলেন ; পথে ত্রিপুর, রঙ্গপুর প্রভৃতি কত দেশ পাইলেন, তার পরে সাধু "নৈরাট পাটনে” উপস্থিত হইলেন । তত্ৰত্য রাজা সাধুকে পরিচয় জিজ্ঞাসিলে সাধু উত্তর করিলেন ঃ– “শ্ৰীহট্ট নগরে বাস মগধ নৃপতি । চিরকাল করি তার রাজ্যেতে বসতি ॥ মোর নাম হীরানন্দ শুন নৃপবর। রাজার ভাণ্ডারে নাই চন্দন চামর ॥ আমারে পাঠাইল রাজা তোমার এদেশে । চন্দন চামর লৈয়া যাইব বিশেষে ॥’ ( বাবাম্বর ) তৎপরে জনৈক যাদুকরের কোপে পড়িয়া হীরানন্দকে বহু দুৰ্দ্দশা ভোগ করিতে হইয়াছিল । কিন্তু হীরানন্দের সেই সকল কাহিনী বিস্তারিত রূপে বর্ণন করার প্রয়োজন নাই, ইতিবৃত্তে যোজন যোগ্যও নহে । সে যাহা হউক, মহারাজ কীৰ্ত্তিধর প্রথম যৌবনে বলবীৰ্য্যের পরিচয় দিয়া থাকিলেও বৃদ্ধকালে তদীয় ভীরুতার অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়। তদীয় মহিষীর উদ্যমে হীরাবস্তের আশ্রয়দাতা পরাজিত হইয়াছিলেন, কিন্তু অতি সত্বরেই গৌড়-পতি ইহার প্রতিশোধ লইতে দ্বিতীয় আয়োজন করেন । এই নরপতির নাম গিয়াসউদ্দীন । শ্ৰীহট্টের পুণ্যভূমি সৰ্ব্বপ্রথম গিয়াসউদ্দীনের সময়েই মোসলমানগণ কর্তৃক স্পষ্ট হয়। গিয়াসউদ্দীন ক্ষমতাশালী রাজা ছিলেন, :: তিনি মসজিদ, মাদ্রাসা ও রাস্তাদিতে গৌড়রাজ্য ভূষিত করেন। তিনি হিন্দু মোসলমান ভেদে শাসন প্রভেদ করিতেন না। তিনি দিল্লীর অধীনতা পাশ ছেদন করতঃ স্বাধীনতাবলম্বন করিয়াছিলেন ; এবং পূর্বাঞ্চলীয় কোন কোন রাজাকে পরাভূত করিয়া