পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S 8 ভৌগোলিক বৃত্তান্ত। [ ১ম ভাঃ ২য় অঃ – মাসিং নদী ভরল বিল হইতে উৎপন্ন হইয়া সুরমায় পড়িতেছে। ছড়াও খালা—পৰ্ব্বত নিঃস্বত ক্ষীণকায় স্রোতকে ছড়া (Brook) বলে। শ্ৰীহট্টে অগণ্য পাৰ্ব্বত্য ছড়া আছে। উদাহরণ স্থলে—উত্তর শ্ৰীহট্টে (সদরে )— গোয়ালি ছড়া, করিমগঞ্জে (জাফর গড়ে)—বড় ছড়া, দক্ষিণ শ্রীহট্টে (লংলায় )— পালকী ছড়া, হবিগঞ্জে (মুচিকান্দি )—বেয়াছড়ার নাম করা যাইতে পারে। মানব কৃত স্রোতকে খাল ( খাত ) বলে। যথা—মৌলবী খাল,—মৌলবী আবদুর রহিম কর্তৃক খনিত। এই খাল সুরমা নদীর সহিত কুশিয়ারাকে সংযুক্ত করে। ইহাতে করিমগঞ্জ প্রভৃতি পূৰ্ব্বাঞ্চল হইতে শ্ৰীহট্ট সহরে যাওয়ার রাস্ত সংক্ষেপ হয় । 體 আমিরউদ্দীন খাল—বরাকের সহিত ইটাখলা নদীকে সংযুক্ত করিয়াছে। এই খালে শ্রীহট্ট হইতে ঢাকা ষাওয়ার পথ সংক্ষেপ হয়। து: নটী খাল—ইহা মানবকৃত নহে। করিম গঞ্জে কুশিয়ারার সহিত লঙ্গাই নদীকে সংযুক্ত করিয়াছে। এই খালের নাম তবে একটু কবিত্ব বা রসিকত আছে। যখন লগাই নদীতে জল বৃদ্ধি হয়, তখন ইহা লঙ্গাইকে কুশিয়ারার সহিত সংযোগ করে, তখন এই স্রোতস্বতী উত্তরবাহিনী হইয়া কুশিয়ারাতে আত্মসমর্পণ করে। আবার কুশিয়ারাতে জল বৃদ্ধি হইলে নটখাল লঙ্গাইর দিকে ফিরিয়া যায়, দক্ষিণবাহিনী হইয়া লঙ্গাইর সহিত মিলিত হয়। নটীখাল হেমন্তে শুকাইয়া যায়। শ্ৰীহট্ট জিলায় খালের সংখ্যা অগণ্য। প্রায় সমস্ত খালই হেমন্তে শুষ্ক হইয়া যায়। শ্ৰীহট্ট জিলায় জোয়ারের বেগ দক্ষিণ পশ্চিম দিকে অল্প দূর পর্য্যন্ত যৎসামান্য অনুভব হয়। নদীর বেগ প্রখর কিন্তু হেমন্ত কালে অপেক্ষাকৃত অল্প। ( হাওর বা প্রান্তর ) হাওর শব্দটি শ্রীহট্টেই শুনা যায়, প্রান্তর ইহার ঠিক অনুবাদ না হইলেও উহার অনেক ভাব প্রকাশ করিতে পারে। বর্ষার অনতি গভীর জলমগ্ন ভূভাগ—যাহার অধিকাংশই হেমন্তে শুষ্ক হইয়া যায়, তাহাকেই এতদঞ্চলে হাওর