পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৭৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপসংহার-কাছাড়ের কথা । У e Č এই দুখান দলিল হইতে জানা যায় যে, কাছাড়ের মন্ত্রী জায়গীর পাইতেন, যে কোন ব্যক্তি মন্ত্রীকে হিংসা করিলে গুরুতর রাজদগু ভোগ করিত। মন্ত্রী সাতবার “মহা অপরাধ” করিলে অব্যাহতি পাইতেন। ‘মহা অপরাধ অর্থে হত্যা —অদ্যপি তদঞ্চলে মন্ত্রীর “সাত খুন মাফ" পাওয়ার কথা প্রবাদরূপে প্রচলিত আছে। এই দুখন দলিল হইতে ১৭৬ বংসর পূৰ্ব্বে কাছাড়ে ব্যবহৃত বঙ্গভাষার নমুনাও প্রাপ্ত হওয়া যাইবে। জয়ন্তীয়ায় প্রচলিত “পাতিলাম’ প্রভৃতি শব্দও এই দলিলে দৃষ্ট হয়। প্রাচীন দলিল মাত্রেই বর্ণশুদ্ধির প্রতি লক্ষ্য থাকা দৃষ্ট হয় না,—ইহাতেও নাই। ২য় দলিল খানার শীর্ষে “১৪ চওঁী” দেবীর নাম ত্রিপুরা রাজ্যের প্রসিদ্ধ ১৪ দেবতার স্মারক কি না বিবেচ্য। মহারাজ কীৰ্দ্ধিচন্দ্রের পর রামচন্দ্র রাজা হন । গেইট সাহেব ইহশরই নাম “সন্ধিকারী” দিয়াছেন । বংশাবলীতে রাজার নাম রামচন্দ্র ছিল বলিয়া জ্ঞাত হওয়া যায়। রামচন্দ্রের শাসন সময়ে ত্রিপুরাধিপতি কাছাড় আক্রমণ করিয়াছিলেন ; রামচন্দ্র অনন্তোপায় হইয়া তৎসহ সন্ধি করিতে বাধ্য হন । ১৭৬৫ খৃষ্টাব্দে আহোমরাজ রাজেশ্বর সিংহের দূত ইহার নিকটে উপস্থিত হইলে তিনি তৎপ্রতি অসদ্ব্যবহার করায় আহোমরাজ ক্রুদ্ধ হন ও সেনাপতি বড়বড় যাকে সসৈন্যে প্রেরণ করেন। আহোম সৈন্তের আগমনে কাছাড়পতি ভীত হইয়া জীষ্মসমর্পণ করেন ও রাজেশ্বর সিংহ সন্নিধানে নীত হন। তখন রামচন্দ্র অনন্তোপায় হইয়৷ সন্ধি করতঃ আত্মমোচন করেন। সন্ধিকারী রাজা রামচন্দ্র ১৭৭১ খৃষ্টাব্দ পর্য্যস্ত রাজত্ব করেন। ইহার পরে হরিশ্চন্দ্র ভূপতি সিংহাসনারোহণ করেন, ইহার সিংহাসনা রোহণের পরে রাজমাত লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবীর অভিপ্রায়ে তদানীন্তন রাজধানী খলপুরে ১৬৯৩ শকে (১৭৭১ খৃষ্টাব্দে) এক নূতন প্রাসাদ নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। * করিব। এ বংশ তোমার বংশীয়কে পালন কবিবেক । তোমার মহা মহা অপরাধ হইলে সাতটা অপবাধ ক্ষম করত: তৎপর দণ্ড দেওয়া যাইবে । তোমার বংশীয় কেহ এ বংশ হইতে অন্যায় দণ্ড পাইবে না। এ অনুগ্রহ ভুলিলে (অস্পষ্ট) এ অঙ্গীকার ভুলিব না । সাত সত্য। ইতি ।

  • Seo the Report on the Progress of the Historical Rosearch in Assam.—1897. P. 10.