পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/২৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৪৪ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত তৃতীয় ভাগ-তৃতীয় খণ্ড দিগকে আহবান পূৰ্ব্বক গদীভুক্ত হইতে প্রার্থনা করিলেন। রমাবল্লভ গৌরপার্ষদ শিবানন্দ বংশীয়, ইহা সকলেই জ্ঞাত ছিলেন। অধিকন্তু তাহার প্রদত্ত প্রমাণে সেই বৈষ্ণব সভায়ও ইহা বিশেষ রূপে প্রতিপন্ন হইল ও সৰ্ব্বস্বীকৃত রূপে গৃহীত হইল। তাহারা সুতরাং ইহাকেও “গদীয়ান” গণ্য করিলেন, তদবধি সেন বংশীয়গণও “গদীয়ান” রূপে খ্যাত হইয়াছেন। কেবল তাহাই নহে, শিবানন্দ সেন শ্ৰীক্ষেত্র যাত্রী ভক্ত বর্গের তত্ত্বাবধান করিয়া লইয়া যাইতেন;৬ সেই সূত্রে সকলে তখন ইহাকে গদী সমূহের “পাটয়ারী” করিলেন; কোন মহোৎসব উপলক্ষে কে কোন স্থানে বসিবেন, এ বংশীয়গণ তাহার লেখা ও নির্ণয় করিয়া যথা স্থানে যোগ্য ব্যক্তিকে বসাইবেন এবং তত্ত্বাবধান রাখবেন, এই ভার প্রাপ্ত হইলেন। রাম বল্লভের চারি পুত্রের মধ্যে সৰ্ব্ব কনিষ্ঠ পুত্রের নাম আত্মা রাম সেন। আত্মা রাম দীর্ঘজীবী পুরুষ ছিলেন, তাহার বৃদ্ধ বয়সে এদেশে ইংরেজ রাজ্য সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। গবর্ণমেন্ট তদীয় পিতৃ-প্রাপ্ত দেবত্র বাজেয়াপ্ত করিতে উদ্যত হইলে, তিনি আপত্তির মোকদ্দমা উপস্থিত করেন, তাহাতে উপরোক্ত সনন্দোল্লেখিত ভূমি সিদ্ধ নিষ্কর রূপে পরিগণিত হইয়া মুক্ত হয় এবং ৩২৭ নং তালুক গণ্যে বন্দোবস্ত হয়। পূৰ্ব্বোক্ত গোবিন্দ রামের ভ্রাতার নাম রমাকান্ত সেন ছিল, এই রমাকান্তের গোপাল রাম ও গোবিন্দ রামের পুত্র রমাবল্লভের মধ্যে মনোমালিন্য উপস্থিত হয়, তাহাতে রমাবল্লভ জগৎসী পরিত্যাগ পূৰ্ব্বক বড়হর গ্রামে গিয়া বাস করেন। রমাবল্লভের জ্যেষ্ঠ পুত্র তুলসী রাম সিদ্ধ পুরুষ ছিলেন, তাহার স্ত্রী ও সাধ্বী ও বিদূষী রমণী ছিলেন; মুগ্ধবোধ ব্যাকরণে তাহার বিশেষ বুৎপত্তি ছিল। সিদ্ধ পুরুষ তুলসী রামের সম্বন্ধে কথিত হয় যে একদা তরফ পরগণায় তিনি এক শিষ্যালয়ে উপস্থিত হইলে শিষ্যের পুত্র মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তদৃষ্টে তিনি মৃতুকে "হরিবল” বলিয়া পা ধাক্কা দিলে ঐ মৃত পুত্র জীবন প্রাণ্ডে জাগিয়া উঠিয়াছিল। রমা বল্লভের তিন পুত্র অপুত্রক ছিলেন, সৰ্ব্ব কনিষ্ঠ আত্মা রামের দুই পুত্র, তন্মধ্যে গঙ্গারাম সেন একজন সাধক ছিলেন । ইহার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা রামবল্পভের গৌরকিশোর, ব্রজকিশোর, ও নন্দকিশোর নামে তিন পুত্র হয়, ইহাদের পৌত্ৰাদি জীবিত আছেন। নন্দ কিশোর সেনের পুত্র কুঞ্জ কিশোর, তাহার পুত্র শ্রীযুক্ত কৃষ্ণ কেশব সেন মহাশয় হইতে এই বিবরণ প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছে। বাসুঘোষের বংশ কথা আদিকথা আমরা আর একটি মহাবংশের কাহিনী বর্ণন করিতে উপস্থিত হইয়াছি, এটি বাসু ঘোষের বংশ। বাসুদেব ঘোষ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অন্তরঙ্গ পার্ষদ ও একজন প্রসিদ্ধ পদ কৰ্ত্তা ছিলেন। উত্তরাবাৰ্টীয় সৌকালীন গোত্রজ সোমেশ্বর ঘোষবংশাবতংশ শুকদেব ঘোষের নয়টি পুত্র হয়, ইহাদের নাম কংশারি, দনুজারি, মীনকেতন, গোবিন্দ, মাধব, বাসুদেব, জগন্নাথ, দামোদর ও মুকুন্দ। ইহাদের মধ্যে প্রথম তিনজন বংশ প্ৰবৰ্ত্তক, দ্বিতীয় তিনজন শ্ৰীমহা প্রভুর পার্ষদ ভক্ত এবং শেষোক্ত তিনজন নিঃসন্তান ছিলেন । প্রথম তিনজনের বংশোল্লেখ শেষে করিব। দ্বিতীয় তিনজনের কথা বৈষ্ণব গ্রন্থ পাঠক সকলেই অবগত আছেন। গোবিন্দ, মাধব ও বাসু এই তিনজন শ্ৰীমহাপ্রভুর পার্ষদ ভক্ত ও ৬. “প্রতিবর্ষে প্রভুরগণ সঙ্গেতে লইয়া। নীলাচলে যান পথে পালন করিয়া" শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত