পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩০৮ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত তৃতীয় ভাগ-চতুর্থ খণ্ড প্রধান ভূস্বামীরূপে গণ্য হন ও প্রজাগণকর্তৃক “রাজা" বলিয়া আখ্যাত হইতে থাকেন। কুরশা মৌজায় "রাজবাড়ী" নামে খ্যাত ইহার প্রাচীন ভগ্ন বাটিকা অদ্যপি দৃষ্ট হয়। হরিহরের সহিত উৰ্দ্ধনদেব ও বদ্ধনদেব নামে দুই ভ্রাতা এদেশে আসিয়াছিলেন, দিনারপুরের পুরকায়স্থগণ ইহাদের বংশ জাত । হরিহরের পুত্র শ্ৰীবৎস আচাৰ্য্য তত্ৰাঞ্চলের বহুব্যক্তিকে শিষ্য করিয়াছিলেন। এই বং পরে অনেক খ্যাতনামা ব্যক্তির উদ্ভব হয়; নিম্নে কয়েক জনের নামোল্লেখ করা হইল। গৌরীকান্ত বিদ্যানিবাস-গৌরীকান্ত অসাধারণ সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত ছিলেন; তিনি দিনারপুর, আথানগিরি, পাচাউন প্রভৃতির "রাজপণ্ডিত” প্রাপ্ত হন। ইহার সময় হইতে এই বংশীয়গণ ভট্টাচাৰ্য্য আখ্যা ধারণ করিতেছেন। কৃষ্ণদেব বিদ্যালঙ্কার-বিদ্যালঙ্কার এক প্রসিদ্ধ ব্যক্তি ছিলেন। নবাব শমশের খা বাহাদুর ইহাকে এক সনন্দে (নং ৬২২) দিনারপুর হইতে ২২/২ ॥১ I০ জমি ব্ৰহ্মত্র দান করেন; তাহার মৃত্যুর পর তৎপুত্র কৃষ্ণচন্দ্র ভট্টাচাৰ্য ইহা তছরূপ করেন। এই কৃষ্ণচন্দ্রও একজন গুণী ব্যক্তি ছিলেন, কৃষ্ণচন্দ্রের পুত্রের নাম সদাশিব বলিয়া সনদের প্রতিলিপির মন্তব্যে লিখিত আছে। সদাশিব একজন বাকসিদ্ধ ও মিতবাক পুরুষ ছিলেন এবং যখন যাহা বলিতেন, তাহা অব্যর্থ হইত। ইহার গুণে আকৃষ্ট হইয়া মিরাশী ও রিচির বহু সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি তাহার শিষ্যত্ব স্বীকার করেন। রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ-বিদ্যাবাগীশ একজন উৎকৃষ্ট নৈয়ায়িক পণ্ডিত ছিলেন, শ্রীহট্টের জনৈক নবাব হইতে তিনি ১০/০ দশহাল ভূমি নিষ্কর প্রাপ্ত হন। নবাব নজীবালী খা বাহাদুরের ৩০ জলুস ২৬ সাবান তারিখযুক্ত সনদে (নং ৯৯) তিনি দিনারপুর, আগনা ও জনতার হইতেও মোট ৮। 2৭? ভূমি ব্ৰহ্মত্র প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। মাধবচন্দ্র তর্কবাগীশ ও চণ্ডীচরণ ন্যায়রত্ন-ইদানীং এই দুই-ব্যক্তি এই বংশে বিখ্যাত হইয়া উঠিয়াছিলেন। মাধবচন্দ্র বহুদিন দেশে অধ্যাপনা করেন ও শেষ জীবনে রংপুর গমন করিয়া বামণডাঙ্গায় রাজবাড়ীতে “দ্বারপণ্ডিত" নিযুক্ত হইয়াছিলেন। ন্যায়রত্ন সংস্কৃত ভাষায় কবিতা লিখিতে দক্ষ ছিলেন, কিন্তু তাহার রচিত কোন কবিতা পাওয়া যায় নাই। মাধবচন্দ্রের জ্যেষ্ঠ পুত্ৰ শ্ৰীযুত মাহেন্দ্রচন্দ্র কাব্যসাংখ্যতীর্থ হইতে এই বিবরণ প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছে।