চেয়ে দেখি, লক্ষ দীপের সনে
দীপখানি তার জ্বলে অকারণে।
২৫ শ্রাবণ ১৩১২
আগমন
তখন রাত্রি আঁধার হল, সাঙ্গ হল কাজ—
আমরা মনে ভেবেছিলেম, আসবে না কেউ আজ।
মোদের গ্রামে দুয়ার যত রুদ্ধ হল রাতের মতো—
দুয়েক জনে বলেছিল, ‘আসবে মহারাজ।’
আমরা হেসে বলেছিলেম, ‘আসবে না কেউ আজ।’
দ্বারে যেন আঘাত হল শুনেছিলেম সবে—
আমরা তখন বলেছিলেম, ‘বাতাস বুঝি হবে।’
নিবিয়ে প্রদীপ ঘরে ঘরে শুয়েছিলেম আলসভরে—
দুয়েক জনে বলেছিল, ‘দূত এল বা তবে।’
আমরা হেসে বলেছিলেম, ‘বাতাস বুঝি হবে।’
নিশীথরাতে শোনা গেল কিসের যেন ধ্বনি—
ঘুমের ঘোরে ভেবেছিলেম মেঘের গরজনি।
ক্ষণে ক্ষণে চেতন করি কাঁপল ধরা থরহরি—
দুয়েক জনে বলেছিল, ‘চাকার ঝনঝনি।’
ঘুমের ঘোরে কহি মোরা, ‘মেঘের গরজনি।’
তখনো রাত আঁধার আছে, বেজে উঠল ভেরি—
কে ফুকারে, ‘জাগো সবাই, আর কোরো না দেরি।’
বক্ষ-’পরে দু হাত চেপে আমরা ভয়ে উঠি কেঁপে—
দুয়েক জনে কহে কানে, ‘রাজার ধ্বজা হেরি।’
আমরা জেগে উঠে বলি, আর তবে নয় দেরি।’