পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পুনশ্চ
৬৬৫

কাজেই চুরি করে আনতে হল।
ওর লোভ নেই,
ও কিছু রাখতে চায় না, দেখতে চায়
কী আছে ভিতরে।
খোদনদাদা কানে মোচড় দিতে দিতে বললে,
‘চুরি করলি কেন!’
লক্ষ্মীছাড়াটা জবাব করলে,
‘ও কেন দিল না?’
যেন চুরির আসল দায় পাকড়াশিদের ছেলের।

ভয় নেই, ঘৃণা নেই ওর দেহটাতে।
কোলা ব্যাঙ তুলে ধরে খপ্ ক’রে;
বাগানে আছে খোঁটা পোতার এক গর্ত,
তার মধ্যে সেটা পোষে,
পোকামাকড় দেয় খেতে।
গুবরে পোকা কাগজের বাক্সোয় এনে রাখে,
খেতে দেয় গোবরের গুটি,
কেউ ফেলে দিতে গেলে অনর্থ বাধে।
ইস্কুলে যায় পকেটে নিয়ে কাঠবিড়ালি।
একদিন একটা হেলে সাপ রাখলে মাস্টারের ডেস্কে—
ভাবলে, ‘দেখিই না কী করে মাস্টারমশায়।’
ডেক্‌সো খুলেই ভদ্রলোক লাফিয়ে উঠে দিলেন দৌড়—
দেখবার মতো দৌড়টা।

একটা কুকুর ছিল ওর পোষা—
কুলীনজাতের নয়,
একেবারে বঙ্গজ।
চেহারা প্রায় মনিবের মতো,
ব্যবহারটাও।