পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বণ, ১৩২৫ কিন্তু পথ্যে বিশ্বাস কতেন না, সুতরাং বাবার আশ্রয় নেওয়াই সঙ্গত মনে করলুম। জানতুম তার আশ্রয়ে জ্বর বিষম হলেও সাবু খেতে হবে না। একদিন রাত দুপুরে রাণাঘাট থেকে একটি প্যাসেঞ্জার টেনে উত্তরাভিমুখে যাত্রা করলুম। মেল ছেড়ে প্যাসেঞ্জার ধরবার একটু কারণ ছিল। একে ডিসেম্বর মাস তার উপর আমার শরীর অসুস্থ তাই এক পাল অপরিচিত লােকের সঙ্গে ঘেষাঘেঁসি করে অতটা পথ যাবার প্রবৃত্তি হ’ল না। জানতুম যে প্যাসেঞ্জারে গেলে সম্ভবত একটা পূরে সেকেণ্ড ক্লাস কমপার্টমেন্ট আমার একার ভােগেই আসবে। আর তাও যদি না হয় ত গাড়ীতে যে লম্বা হয়ে শুতে পর, আর কোনও গার্ড ড্রাইভার গোছের ইংরেজের সঙ্গে একত্র যে যেতে হবে না, এ বিষয়ে নিশ্চিত ছিলুম। এর একটা আশা ফলেছিল, আর একটা ফলে নি। আমি লম্বা হয়ে শুতে পেরেছিলুম কিন্তু ঘুমতে পাই নি। গাড়ীতে একটা বুড়ো সাহেব ছিল, সে রাত চারটে পৰ্যন্ত অর্থাৎ যতক্ষণ হেস ছিল, ততক্ষণ শুধু মদ চালালে। তার দেহের গড়নটা নিতান্ত অদ্ভুত, কোমর থেকে গলা পর্যন্ত ঠিক বােতলের মত। মদ খেয়েই তার শরীরটা বােতলের মত হয়েছে, কিম্বা তার শরীরটা বোতলের মত বলে মদ সে খায়, এ সমস্যার মীমাংসা আমি করতে পারলুম না। যারা দেহের গঠন ও ক্রিয়ার সম্বন্ধ নির্ণয় করে, এProblem-টা তাদের জন্য, অর্থাৎ ফিজিওলজিষ্টদের জন্য রেখে দিলুম। যাক এ সব কথা। আমার সঙ্গে বৃদ্ধটি কোনরূপ অভদ্রতা করে নি, বরং দেখবামাত্রই আমার প্রতি বিশেষ অনুরক্ত হয়ে, সে ভদ্রলােক এতটা মাখামাখি করবার চেস্টা করে- ছিল, যে আমি জেগে থেকেও ঘুমিয়ে পড়বার ভাণ করলুম। মাতাল আমি