পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা বাঙ্গালীর শিক্ষা বাঙ্গলা দেশের এই অন্নাভাব অস্বীকার করিবার উপায় নাই। সমস্যা যে দিন দিন উৎকট হইয়া উঠিতেছে সেদিকে চক্ষু বুজিয়া কোনও লাভ নাই। এবং ইহার একটা ব্যবস্থা না হইলে যে নাতিরও মঙ্গল নাই তাহাও নিশ্চিত সত্য। ইংরেজ পণ্ডিত হার্বাট স্পেন্সার,—যার একটা অভ্যাস ছিল সকলের জানা অত্যন্ত সাধারণ তথ্য হইতে গভীর তত্ত্ব কথার নিষ্কাশনের চেষ্টা করা,—তার একখানি সুপরিচিত গ্রন্থের একটী অধ্যায়, তিনি এই বলিয়া আরম্ভ করিয়াছেন যে, জীবের কোন কাজ করিবার পূর্বে তার বাঁচিয়া থাকা প্রয়ােজন; সুতরাং যে বিধিব্যবস্থা তাহাকে বাঁচাইয়া রাখে তাহার দাবী, যে সকল বিধিব্যবস্থা, তাহাকে আর সব কাজের উপযুক্ত করে, তাহাদের চেয়ে প্রবল। শিক্ষিত বাঙ্গালীর অভাব মােচনের ব্যবস্থা যে আর না করিলেই নয় এ কথা সমর্থনের জন্য জীববিদ্যার এই আদিতত্ত্বে যাইবার প্রয়ােজন হয় না। আজ বাঙ্গলা দেশের শিক্ষিত শ্রেণীর ঘরে ঘরে দারিদ্র্য যে কেমন করিয়া জীবনকে ক্ষয় করিতেছে, স্বাস্থ্যকে বিদায় দিতেছে, দেহ মনের সমস্ত স্ফুর্তি ও আনন্দকে পিষিয়া মারিতেছে, মনুষ্যত্বকে পাহাড় প্রমাণ ভারের নীচে চাপা দিতেছে, তাহা দেখিলে স্বয়ং মােহ মুগরের কবিও অনর্থের অর্থ যে কি তাহা, নিত্য না হােক অন্তত মাঝে মাঝে, ভাবিয়া দেখিবার উপদেশ দিতেন। কিন্তু আমাদের অসমস্যা এমন কঠিন হইয়া উঠিয়াছে বলিয়াই আমাদের সতর্কতার প্রয়ােজন। অন্নসংগ্রহকে জাতির সমস্ত চেষ্টা ও প্রতিভার কেবল প্রথম নয় প্রধান লক্ষ্য করিয়া এই সমস্যার একটা উত্তর খুঁজিবার প্রলােভন স্বাভাবিক। কিন্তু বােগনশের উৎসাহে