পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৭৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণকুমারী দেবী যখন আমার মাতৃদেবী সারদাম্বন্দরী ] পুত্রবধু হইয়া আমাদের গৃহে আসেন, তখন আমাদের প্রপিতামহের পরিবারে অন্তঃপুর পরিপূর্ণ। পিতামহ, দ্বারকানাধ ঠাকুরের স্ত্রী ও পুত্রবধূগণ র্তাহার প্রাতৃবর্গের স্ত্রীকণ্ঠ পুত্রবধূগণ র্তাহার ভগিনী ভাগিনেয়ীগণ প্রভৃতি সকলেই এই এক বাড়ীতে তখন বাস করিতেন। এই বঃ পরিবারের কেহই মুর্থ ছিলেন না। বরঞ্চ ইহাদের মধ্যে কেহ কেহ বিশেষ বিদ্যাবতী বলিয়া আদরণীয়া ছিলেন। স্ত্রীলোকের বিদ্যাশিক্ষা প্তাহার গৌরবেঃ বিষয় বলিয়াই জানিতেন । আহার বিরাম পূজা অৰ্চনার স্থায় সে কালেও আমাদের অন্তঃপুরে লেখাপড় মেয়েদের মধ্যে একটি লিতানিয়মিত ক্রিয়ানুষ্ঠান ছিল। প্রতি দিন প্রভাতে গয়লামী যেমন দুগ্ধ লইয়া আসিত, মালিনী ফুল যোগাইত, দৈবজ্ঞ ঠাকুর পাক্তি পুথি হন্তে দৈনিক শুভাশুভ বলিতে আসিতেন, তেমনি স্নানবিশুদ্ধ, শুভ্ৰবসনা গৌরী বৈষ্ণবী ঠাকুরাণী বিদ্যালোক বিতরণার্থে অন্তঃপুরে আবিভূর্ত হইতেন। ইনি নিতান্ত সামাষ্ঠ বিদ্যাবুদ্ধিসম্পন্ন ছিলেন না। সংস্কৃত বিদ্যায় ইহার যথেষ্ট ব্যুৎপত্ত্বি ছিল, অতএবং বাঙ্গাল) ভাগ জানিতেন ইহা বলা বাহুল্য। উপরন্তু ইহার চমৎকার বর্ণনাশক্তি ছিল, কথকতা-ক্ষমতায় ইনি সকলকে মোহিত করিতেন । ধাহীদের বিদ্যালাভের ইচ্ছা নাও বা থাকিত, তাহারাও বৈষ্ণবী ঠাকুরাণীর দেব দেবী বর্ণনা প্রভাত বর্ণনা শুনিতে কুতুহলী হইয় পাঠগৃহে সমাগত হইতেন । আমার ভাগ্য বৈষ্ণবী ঠাকুরাণীর দর্শনলাভ ঘটে নাই,••• আমি শৈশবে অন্তঃপুরে সকলেরই লেখাপড়ার প্রতি A* অনুরাগ দেখিয়াছি। মাতাঠাকুরাণী ত কাজকৰ্ম্মেয় অবসরে সারাদিনই একখানি বই হান্তে লষ্টয়া থাকিতেন। চাণক্যশ্লোক তাহার বিশেষ প্রিয় পাঠ্য ছিল, প্রায়ই বইখানি লইয়া শ্লোক্ষগুলি আওড়াইতেন। তাছাকে সংস্কৃত রামায়ণ মহাভারত পড়িয়৷ শুনাইবার জন্ত প্রায়ই কোন না কোন দাদার ডাক পড়িত। দিদিম।--মায়ের খুড়ীম, তিনি ত পুস্তষ্কের কীট ছিলেন । কাব্য উপন্থাসাদির ত কথাই নাই ; তন্ত্রপুরাণ, সাংখ্য আর দর্শনাদির যত কঠিন অনুবাই হউক না কেন, তাহাতে দন্তুষ্ট করিবার চেষ্টা মা করিয়া থাকিতে পারিতেন না। আর কোন বই না পাইলে শেষে অভিধানখানাই খুলিয়া পড়িতে বসিতেন। বড়দাল মহাশয়ের