পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*8 ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মিস্ মেরী কাপেণ্টারের নাম এদেশে মানবহিতৈষী কৰ্ম্মী ও ভারত-বন্ধু বলিয়া সুপরিজ্ঞাত। ১৮৬৬ খ্ৰীষ্টাব্দের শেষাশেষি তিনি কলিকাতায় আসেন। ভারতবর্ষে নারী-শিক্ষার প্রচার ছিল তাহার প্রাণের ইচ্ছ। বিদ্যাসাগর যে স্ত্রীশিক্ষা-বিস্তার কার্য্যে একজন বড় কৰ্ম্মী, এ কথা সুবিদিত। মিস কাপেণ্টার কলিকাতা পৌছিয়াই পণ্ডিতের সহিত পরিচিত হইবার জন্য ব্যগ্র হইয়৷ উঠিলেন। ডিরেক্টর অফ পাবলিক ইন্‌ষ্ট্রাকৃশন অ্যাটকিনসন সাহেব বে-সরকারী পত্রে বিদ্যাসাগরকে জানাইলেন,— “প্রিয় পণ্ডিত মহাশয়, মিস্কার্পেণ্টারের নাম শুনিয়া থাকিবেন। তিনি আপনার সহিত পরিচিত হইতে, এবং স্ত্রীশিক্ষার উন্নতি বিষয়ে তাহার অভিপ্রায় জানাইতে ইচ্ছুক...।” (২৭ নবেম্বর ১৮৬৬ ) ডিরেক্টর বীটন-বিদ্যালয়ে মিস্ কাপেণ্টারের সহিত পণ্ডিতের পরিচয় করাইয়া দিলেন। প্রথম আলাপেই উভয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব স্থাপিত হইল। তিনি বিদ্যাসাগরের সহিত কলিকাতার নিকটবর্তী নলিক-বিদ্যালয়গুলি পরিদর্শন করিলেন। ১৪ ডিসেম্বর ১৮৬৬ তারিখে ডি অ্যাটকিনসন, স্কুল-ইনস্পেক্টর উড়ো এবং পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্রের সহিত মিস্ কাপেণ্টার উত্তরপাড়া বালিকা-বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। ফিরিবার মুখে বিদ্যাসাগরের বগী-গাড়ী উটাইয়া যায়। তিনি পড়িয়া গিয়া যকৃতে গুরুতর আঘাত পান। এই দুর্ঘটনার ফলে র্তাহার স্বাক্ষ্য একেবারে ভাঙিয়া যায়। যে সাঙ্ঘাতিক ব্যাধি শেষে ১৮৯১ খ্ৰীষ্টা । সুলাই মাসে তাহাকে মৃত্যুপথে লইয়া যায়, এই দারুণ আঘাতই তা মূল কারণ। কিন্তু বিদ্যাসাগর এই স্বাস্থ্যহানির দিকে মোটেই মঞ্জর দিলেন না,— প্রকৃত দেশহিতৈষীর ন্যায় দেশহিতের জন্য অক্লাস্ত পরিশ্রম করিতে লাগিলেন।